ঢাবি শোক দিবস পালিত


প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৫

ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস। ১৯৮৫ সালের এদিন রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়।

এ উপলক্ষে সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৭ টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শোক মিছিল সহকারে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালন করেন। পরে জগন্নাথ হল অক্টোবর স্মৃতিভবনস্থ টিভি কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রকীব উদ্দীন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমিতির সভাপতিবৃন্দ।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্ঘটনার সময়ে আহত ছাত্র উপ-রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, হলের ছাত্রদের পক্ষ থেকে সঞ্জীব বিশ্বাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পক্ষে মোতাহের হোসেন প্রিন্স, হলের সিনিয়র আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, প্রাক্তন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক এবং হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার। আলোচনা সভা সঞ্চালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “এই ১৫ অক্টোবর যেন আমরা বিস্মৃত না হই। এই শোক দিবস আমাদের দায়িত্বশীলতা, কর্তব্যপরায়ণতা, উদারতা এবং মানবিকতার তাগিদ দিয়ে যায়, সচেতনতা সৃষ্টির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

এই দিবসের তাৎপর্য আমাদের কাছে অত্যন্ত কার্যকর, ১৫ই অক্টোবর এই শোক দিবস শিক্ষা দেয় দুর্যোগ সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সম্পর্কে সচেতনতা, সতর্কতা এবং ঝুঁকি নিরসনে আমাদের ভূমিকা ও দায়িত্ববোধকে এই দিবসটি জাগ্রত করে। যারযার অর্পিত দায়িত্ব পালন করলে আমরা সকল দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাব, দায়িত্বহীনতার কারণে অনেক দুখঃজনক ঘটনার জন্ম হয়।

অনুষ্ঠানের শেষে উপাচার্য দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারগুলোর সঙ্গে সংহতি ও সংবেদনশীলতা যাতে অব্যাহত রাখা হয় এ-ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও হল কর্তৃপক্ষের যেন কোন কার্পণ্য না থাকে সে দিকে দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
     
এদিকে, শোক দিবস উপলক্ষে উপাসনালয় ও মসজিদসমূহে প্রার্থনা সভা ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত, নিহতদের তৈলচিত্র ও তৎসম্পর্কিত দ্রব্যাদি প্রদর্শন, রক্তদান কর্মসূচি, সন্ধ্যায় জগন্নাথ হল উপাসনালয়ে ভক্তিমূলক গানের অনুষ্ঠান (শোক সঙ্গীত ও কবিতা আবৃত্তি) অনুষ্ঠিত হবে। শোক দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে একটি স্মারক সংকলন।

এছাড়াও শোক দিবস উপলক্ষে গত ১২ অক্টোবর জগন্নাথ হল খেলার মাঠে ‘অক্টোবর স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এর উদ্বোধন করেন প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন। টুর্নামেন্ট আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

এসকেডি/এমএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।