বাবা মার আশা মৃত শিশুটি ফিরে আসবে


প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৫

থাইল্যান্ডে এ বছরের শুরুর দিকে দুই বছরের একটি শিশুর মৃত্যুর পর থেকে তাকে হিমায়িত করে রাখা হয়েছে। সে আবার ফিরে আসবে এই প্রত্যাশা শিশুটির বাবা-মার।

ধারণা করা হচ্ছে, ম্যাথেরিন নাভারাতপং নামের এই শিশুটিই হিমায়িত সর্বকণিষ্ঠ কোনো রোগী। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সে এ বছরের ৮ জানুয়ারি মারা যায়। তার মৃত্যুর পরপরই তার মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করা হয় আর দেহ হিমায়িত করে রাখা হয়।

ম্যাথেরিনের বা-মা দুজনই স্বাস্থ্য প্রকৌশলী। ব্যাংকক শহর থেকে একটু দূরে নিজেদের বাসভবনে শিশুটির বাবা সাহাতর্ন বলেন, যেদিন সে প্রথম অসুস্থ হয়ে পড়ে সেদিনই আমার মাথায় প্রথম চিন্তাটা এলো। মনে হলো বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কিছু একটা করতে হবে যাতে করে যতটা সম্ভব মানবিকভাবে তাকে আমাদের মাঝে রাখা যায়। যদিও বিষয়টি নিয়ে আমার মনের ভেতরেই দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছিলো। পরে আমি আমার পরিবারের অন্যদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি।

যে প্রযুক্তিতে ম্যাথেরিনকে হিমায়িত করে রাখা হযেছে তাকে বলা হয় ক্রাইওনিকস। এতে বিশ্বাস করা হয়, মৃতদেহ কিংবা মস্তিস্ক ( ম্যাথেরিনের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছে) মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তা সংরক্ষণ করা হবে। ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার অসাধারণ অগ্রগতির ফলে তাকে আবার পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে।

baby
শাহাতর্ন ও নারীরাত দম্পতির আরো তিনটি সন্তান রয়েছে। সাহার্তন বলছেন, বৈজ্ঞানিক হিসেবে তিনি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী যে, একদিন এমনটা নিশ্চয়ই ঘটবে। তবে কবে তা তারা জানেন না। অতীতে মনে করা হতো ৪ শ` থেকে ৫ শ` বছর সময় লেগে যেত, তবে বতর্মান প্রেক্ষাপটে ৩০ বছর সময় লাগতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

নাভারাতপং পরিবার অ্যারিজোনা ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অ্যালকোরকে বেছে নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মরদেহ শীতলীকরণ প্রক্রিয়া তদারকির জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের একটি কর্মীদল ব্যাংককে ছুটে আসে। যখনই শিশুটিকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয় তখন থেকেই কাজ শুরু করে এই দল।

মানবদেহের টিস্যুর বড় ধরনের ক্ষতি ছাড়াই বিশেষ প্রক্রিয়ায় দেহ হিমায়িত করা হয়। মৃত্যুর পর ম্যাথেরিনের দেহ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় নিয়ে যাওয়ার পর মস্তিস্ক আলাদা করা হয় এবং ১৯৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তা সংরক্ষণ করা হয়।

অ্যালকোরের ইতিহাসে ১৩৪তম রোগী ম্যাথেরিন এবং এখনো পর্যন্ত সর্বকণিষ্ঠ। বিষয়টি নির্মম এবং অনেকটা সায়েন্স ফিকশনের মত শোনালেও, এই পরিবারটির কাছে তা সন্তান হারানোর গভীর এক বেদনার পরে তাকে ফিরে পাবার অদ্ভূত আকুতি।

এসআইএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।