যুদ্ধ চলছেই মুক্তিযোদ্ধা আজিজের
মাগুরার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ শুধুমাত্র পাক হানাদারদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেই ক্ষান্ত হয় নি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন নিবেদিত প্রাণ চিত্রশিল্পী। তিনি নিজ উদ্যোগে একটি চিত্রকলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করে বিনা বেতনে ছাত্র-ছাত্রীদের চিত্রাঙ্কনসহ সঙ্গীত বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে জাতি গঠনেও অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন প্রায় ২৫ বছর যাবত। এ স্কুলটির নামকরণ করেছেন তিনি বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তফা আজিজের নামে।
সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামে স্থাপিত মুস্তফা আজিজ আর্ট স্কুলে সঙ্গীত এবং চিত্রাঙ্কন শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে এলাকার দরিদ্র ছেলে-মেয়েরা।
মাগুরা জেলা শহরে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এ ধরনের অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ না থাকায় শহর থেকেও অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে -মেয়েদের এ প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে থাকেন শিল্পকর্ম শিক্ষার উদ্দেশ্যে।
মুস্তফা আজিজ আর্ট স্কুলে শুধু যে চিত্রকলা বা সঙ্গীত বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয় তাই নয় এখানে নিয়মিতভাবে বাংলা বর্ষ বরণ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে এখানকার ছেলে-মেয়েদের সচেতন করে তোলার কাজটিও করে চলেছেন আজিজ নৈপুণ্যের সঙ্গেই।
স্কুলটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৮৫ সালে পার্শ্ববর্তী আলমখালী বাজারের একটি ভাড়া করা ঘরে। কিন্তু অব্যাহত অর্থিক সংকটের কারণে নিয়মিতভাবে ঘর ভাড়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে ২০০২ সালে রাউতড়া গ্রামে তার নিজস্ব জমিতে টিনের ঘর তৈরি করে সেখানেই স্কুলের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বাংলা ভাষার জন্য বাঙালির রক্ত দেয়ার গর্বিত ইতিহাস শিশুদের জানানোর জন্য আজিজ নিজ খরচে ওই স্কুলে একটি শহীদ মিনারও তৈরি করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আজিজ জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে রাউতড়া এবং পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ থেকে ছেলে-মেয়েরা সেখানে বিনা বেতনে চিত্রাঙ্কনসহ সঙ্গীত বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছে।
কথা প্রসঙ্গে আব্দুল আজিজ জাগো নিউজকে জানালেন, আর্থিক অসঙ্গতির কারণে এত চেষ্টার পরও স্কুলটি টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছি। তাঁর মৃত্যুর পরও স্কুলটি যাতে টিকে থাকে সে ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
এসএস/এমএস