ব্রিটেনে নিষিদ্ধ রৌদ্রস্নান, দেখলেই জরিমানা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৫৪ এএম, ০৭ এপ্রিল ২০২০

করোনায় ইউরোপের যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত, তার মধ্যে একটি হলো ব্রিটেন। দ্বীপরাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি গ্রেট ব্রিটেন। এখনও পর্যন্ত সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ হাজারের বেশি এবং মৃতের সংখ্যা ৫৩৭৩ জন।

প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত এবং লাশের সারি। পুরো দেশেই চলছে লকডাউন এবং হেলথ ইমার্জেন্সি। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে ঘরে থাকাই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ, সেখানে কিছু ব্রিটিশকে দেখা গেলো, করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হেলথ ডিপার্টমেন্টের তৈরি করা নিয়মকে থোড়াই কেয়ার করতে।

এসব লোক দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন পার্কে এবং সমূদ্র সৈকতে। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা তো দুরে থাক, দলে দলে তারা সানবাথ (রৌদ্রস্নান) করে বেড়াচ্ছে।

england

একদিন আগে ব্রিটিশদের রৌদ্রস্নানের ছবি এবং খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। অবশেষে আজ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর করোনারভাইরাসের কারণে সৃষ্ঠ জরুরি অবস্থার মধ্যে সানবাথ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। শুধু তাই নয়, এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাউকে যদি পার্ক কিংবা সমূদ্র সৈকতে পাওয়া যায়, তাহলে তাকে আইন ভঙ্গের অপরাধে জরিমানাও করা হবে।

তবে, এ নিয়ে আইনি প্রশ্নও তুলেছে ব্রিটেনের কেউ কেউ। নাগরিকরা, এ সম্পর্কিত আইনের সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দাবি করেছে বরিস জনসনের সরকারের কাছে।

ব্রিটেনে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। এ কারণেই মূলতঃ ব্রিটিশরা রৌদ্রস্নানের জন্য সৈকতে জড়ো হচ্ছিলেন। এটা দীর্ঘদিনের অভ্যাস বৃটিশদের। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ঠ জরুরি অবস্থার কারণে, অন্যসব দেশের মত বৃটিশ সরকারও তাদের নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়। যাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে।

রোববারই খবর প্রকাশ পায় লন্ডন কর্তৃপক্ষ একটি পার্ক বন্ধ করে দেয়। যখন দেখা যায় যে, সেখানে হাজারের ওপর মানুষ ঘুরতে এসেছে। যদিও এ বিষয়ে সুষ্পষ্ট নির্দেশনা দাবি করে পার্কে আসা মানুষগুলো। এ কারণেই, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সরাসরি সানবাথিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মুখপাত্র জানিয়ে দেন, সানবাথিং করতে দেখলেই তাকে জরিমানা করতে পারবে পুলিশ।

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী অফিসের মুখপাত্র বলেন, ‘মানুষ অবশ্যই এই সময়ে সানবাথিং করতে সমূদ্র সৈকত কিংবা পার্কে যেতে পারবে না। এটা জরুরি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করা আইনের সুস্পষ্ট পরিপন্থি।’

england

গত কয়েকদিন ধরেই ব্রিটেনের সামাজিক মাধ্যমে কয়েকটি ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। একজন পুলিশ সদস্যকে দেখা যাচ্ছিল, হাত একটি মেগাফোন নিয়ে রৌদ্রস্নানরতদের পার্ক কিংবা সৈকত থেকে চলে যেতে নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু যাদেরকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছিল তারা পুলিশের কথা শুনছেন বলে মনে হচ্ছিল না। তারা উল্টো, এর কারণ এবং এ সম্পর্কিত নির্দেশনার কথা জানতে চান পুলিশের কাছে।

এর জেরেই শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে নির্দেশনা জারি করা হলো। তবে পুলিশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে, তাদের আইন প্রয়োগ করা। কারণ, ব্রিটেনে তাপমাত্রা বাড়ছে। সাধারণ মানুষকে কতটা ঘরে রাখা যাবে এই পরিস্থিতিতে, তা নিশ্চিত নয়।

গ্রেট ব্রিটেনে (ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস) আজও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৩৪জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৩৬৮ জনে। এই সংখ্যাটা অবশ্য কিছু আশা জাগানিয়া। কারণ, গত এক সপ্তাহে দিনপ্রতি মৃতের যে হার, তার মধ্যে আজকের হারটা সর্বনিম্ন।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।