অবশেষে চন্দ্রিমা উদ্যানে যাচ্ছে সচিবালয়


প্রকাশিত: ০৬:১০ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৫

অবশেষে শেরেবাংলা নগরের চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করছে সরকার। এ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তোলা হচ্ছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে দুই হাজার ২০৯ কোটি টাকা।

ফলে চন্দ্রিমা উদ্যানে থাকা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর স্থানান্তরের দরকার হবে। কারণ জাতীয় সংসদ ভবনের স্থপতি বিশ্বখ্যাত লুই আই কানের নকশার আলোকে সচিবালয় গড়ে তোলা হবে। এতে সেখানে কোনো কবর থাকার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর আগে একনেকের একাধিক বৈঠকে বলেছেন, সবাই একমত হলে জিয়ার কবরসহ সংসদ ভবন এলাকায় থাকা কবরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে।

সূত্র বলছে, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিবছর যেখানে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়, সেখানকার ৩২ একর জায়গার ওপর প্রাথমিকভাবে নির্মিত হবে ১৪ তলা ভিতের ওপর চারটি ভবন। প্রতিটি ভবনই হবে ৯ তলাবিশিষ্ট। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ২০৯ কোটি টাকা। পুরো টাকাই রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেয়া হবে। ২০০৯ সালে যখন প্রথমবারের মতো প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়, তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ১০২ কোটি টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে এখন সেই প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দিগুণ হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে চায় সরকার। এর মধ্যে চারটি মূল ব্লকে দুই লাখ ৫৩ হাজার ৩০৯ বর্গমিটার মূল ভবন, ৫৪ হাজার ৫০৫ বর্গমিটার এসোসিয়েট ভবন, পাঁচ হাজার ৮৪৩ বর্গমিটার হলরুম হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রস্তাবিত নতুন সচিবালয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন, প্রশস্ত সড়কসহ থাকবে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। সচিবালয় ঘিরে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সে জন্য তৈরি করা হবে আলাদা সড়ক। উত্তরা, গাজীপুরসহ ওই অঞ্চল থেকে আসা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবাগ্রহীতারা যাতে মেট্রোরেলে করে সরাসরি সচিবালয়ে নামতে পারেন, সে জন্য বিদ্যমান মেট্রো রেলের রুটেও আনা হচ্ছে পরিবর্তন হতে পারে।

এরপর গত ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী আবারো সংসদ ভবন এলাকায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজ, সাবেক মন্ত্রী সবুর খান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ আরো কয়েকজনের কবর অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কথা বলেন।

লুই আই কানের নকশার আলোকে বর্তমানে বাণিজ্য মেলার মাঠ সংলগ্ন চন্দ্রিমা উদ্যানের কিছু অংশসহ ৩২ একর জমির ওপর নতুন সচিবালয় নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। নকশার আলোকে চারটি ব্লকে ভাগ করে সচিবালয় নির্মাণ করা হবে। সেখানে দুটি বড় ব্লকে ৩২টি বড় মন্ত্রণালয় এবং দুটি ব্লকে ১৬টি ছোট মন্ত্রণালয় স্থানান্তর করা হবে।

মন্ত্রণালয়গুলোর নিজস্ব অনুষ্ঠান আয়োজনের সুবিধার্থে নতুন সচিবালয়ে থাকবে সম্মেলন কেন্দ্র ও মিলনায়তন। একইসঙ্গে ব্যাংক, ডাকঘর ও মসজিদ নির্মাণ করা হবে। থাকবে এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের দক্ষিণ দিক দিয়ে সার্ভিস রুট সচিবালয়ে ঢুকবে।

এসএ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।