স্প্যানিশ ফ্লুর পর করোনাকেও হারালেন ইতালির শতবর্ষী বৃদ্ধ
পৃথিবীতে এর আগেও বেশকিছু ভয়ঙ্কর মহামারি এসেছে, যাদের মধ্যে স্প্যানিশ ফ্লু একটি। ১৯১৮ সালে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস পাঁচ কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। আর এতে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয় ৫০ কোটি মানুষ।
ওই সময় ভয়াবহ স্প্যানিশ ফ্লুকে হারিয়েছিলেন ১০১ বছর বয়সী ইতালির এক বৃদ্ধ। ওই বৃদ্ধ এবার হার মানালেন চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকেও।
মহামারি করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭ হাজার ৬৮৯।
করোনায় মৃত্যুপুরী ইতালির এই বৃদ্ধ এ ভাইরাসে সংক্রমিত হলেও তার সঙ্গে লড়াই করে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। স্প্যানিশ ফ্লু ও করোনাভাইরাসের মতো দুই মহামারিকে হারানোর এই ঘটনা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইতালিকে নতুন করে প্রেরণা যোগাবে বলে স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা।
উত্তর-পূর্ব ইতালির রিমিনি শহরের বাসিন্দা ১০১ বছরের ওই বৃদ্ধ নিজেকে ‘মিস্টার পি’ হিসেবে পরিচয় দেন। গত শতকে যখন স্প্যানিশ ফ্লুর মতো মহামারির দাপটে ইতালিসহ গোটা বিশ্ব যখন আতঙ্কিত তখন তার জন্ম।
১৯১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, বছর দুয়েকের সেই মহামারির দাপটে সংক্রমিত হয়েছিল ইতালিসহ বিশ্বের প্রায় ৫০ কোটি মানুষ। আর এতে বিশ্বব্যাপী মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৫ কোটি মানুষের। সেই মহামারিকে হারিয়েছিলেন মিস্টার পি।
সপ্তাহ দুয়েক আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশ কিছু দিনের লড়াইয়ের পর করোনাকে পুরোপুরি পরাস্ত করেন মিস্টার পি।
গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। এরপর তার আত্মীয়-স্বজন তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। একে সামান্য ঘটনা হিসেবে দেখছে না রিমিনি শহরের প্রশাসন।
শহরের ডেপুটি মেয়র গ্লোরিয়া লিসি বলেন, মিস্টার পি জয়ী হয়েছেন। গত শনিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। এই ঘটনা থেকেই শিক্ষা নেয়া যায় যে, ১০১ বছর বয়স হলেও কারোর সম্পর্কে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই ঘটনা যে ইতালিকে নতুন করে উদ্বুদ্ধ করবে, তা মনে করছেন অনেকে। ইতোমধ্যে সে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে ৯৭ হাজার। এতে মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৯ জনের। পরিস্থিতি সামাল দিতে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে ইতালি সরকার।
এমএসএইচ/এমএস