ইতালিতে কমেছে মৃত্যু, তবুও ১৭৫ জনের প্রাণ নিল করোনা
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইতালি সরকারের জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর দেশটিতে মৃত্যুর হার কিছুটা কমেছে। শুক্রবার (১৩ মার্চ) দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণে রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কিন্তু শনিবার (১৪ মার্চ) এ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭৫ জনে।
এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৪৪১ জন দাঁড়ালো। তবে মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার বেড়েছে। অর্থাৎ একদিনে তিন হাজার ৪৯৭ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৫৪৭ জন।
শুক্রবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল এক হাজার ২৬৬ জন। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ২১ হাজার ১৫৭ জন। শুক্রবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৬৬০ জন। আর সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯৬৬ জন।
করোনা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পরামর্শ নিতে চীন থেকে একদল বিশেষজ্ঞ গতকাল ইতালিতে এসে পৌঁছান। ইতোমধ্যে তারা স্পালানজানি হাসপাতাল পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং ইতালিয়ান চিকিৎসকদের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে আলোচনা করছেন।
এদিকে দেশটির প্রায় ছয় কোটি জনগণকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশিও রয়েছেন।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটিতে জারি করা জরুরি অবস্থার মধ্যে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। গোটা ইতালি এখন থমকে আছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। কোনো পর্যটক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারছেন না। সরকারের কঠোর নির্দেশনা, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বাইরে বের না হয়।
করোনারভাইরাসের কারণে জনবহুল রোমও জনশূন্য। রোমের ক্লোসিয়াম, ফোনতানা ত্রেভি, ভেনেসিয়াসহ দর্শনীয় স্থানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গোটা ইতালির জনগণ এখন বন্দি জীবনযাপন করছেন। সুপার মার্কেটগুলোতে একসঙ্গে সবাইকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। সবসময় সেখানে দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলছে সরকার ঘোষিত প্রতিষ্ঠানগুলো। কিছু সুপার মার্কেট ও ক্লিনিকে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে, ইতালিজুড়ে মাস্কের খুবই অভাব দেখা দিয়েছে। সরেজমিন ঘুরে কয়েকটি ফার্মেসিতে মাস্ক পাওয়া যায়নি। বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহে পাওয়া যেতে পারে।
জরুরি অবস্থায় যানবাহনও আগের মতো চলছে না। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে। ইতালির সরকার করোনার মহামারি সামাল দিতে নতুন নতুন আদেশ জারি করে একের পর এক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সর্বত্র প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, সর্বসাধারণের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এমএসএইচ