করোনার থাবায় ভূতুড়ে ইতালি

জমির হোসেন
জমির হোসেন জমির হোসেন , ইতালি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ১২ মার্চ ২০২০

ইতালির সরকার করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে একের পর এক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলে এ ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অ বস্থায় দেশটির লম্বারদিয়া অঞ্চলসহ ১৪ প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি।

ইতালিতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৬২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮২৭ জনের। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছে ১ হাজার ৪৫ জন।

এর আগে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো জরুরি অবস্থার বাইরে রাখা হয়েছিল। ১১ মার্চ হঠাৎ করে একদিনে ১৯৬ জনের প্রাণহানি হয়। রোগীর সংখ্যাও আশংকাজনক হারে বাড়তে থাকায় প্রধানমন্ত্রী কোন্তি গতকাল জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে বলেন, আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য অফিস, আদালতসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে।

বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা থাকবে সুপারমার্কেট, ফার্মেসি, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, সংবাদপত্র বিক্রয়, পেট্রোল পাম্প, কম্পিউটারের দোকান স্টেশনারী দোকান, হোম ডেলিভারী খাবার ইত্যাদি। এর আগের ঘোষণায় বার, রেস্টুরেন্ট সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলার নিয়ম থাকলে বৃহস্পতিবার থেকে সব বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় সরকার।

কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে ২৬০ ইউরো জরিমানা ও তিন মাসের জেল দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। করোনা ঠেকাতে সরকারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ ভাইরাসের কারণে গোটা ইতালি জনশূন্যে পরিণত হয়েছে। পুরো রাস্তা ফাঁকা থাকায় দেশটির প্রতিটি শহর ভূতুড়ে পরিবেশে পরিণত হয়েছে।

শহরের রাস্তায় রাস্তায় থাকছে প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা। পাশাপাশি মাইকিং করে ঘর থেকে বাইরে যেতে জনগণকে নিষেধ করা হচ্ছে।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৬ হাজার ৩শ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং ৪ হাজার ৬৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৬৮ হাজার ২৮৫ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

italy2

১২৪টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৯৬ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬৯ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৬২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৮২৭ জনের।

অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৫৪ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৮৬৯ এবং মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২৮১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৪৮ জন।

স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭ এবং মৃত্যু ৫৫, জার্মানিতে আক্রান্ত ১ হাজার ৯৬৬ এবং মৃত্যু ৩। যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ৩২২ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের।

সুইজারল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত ৬৫২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। জাপানে নোঙ্গর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ৬৯৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৭ জন। অপরদিকে জাপানের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩৯ এবং মৃত্যু ১৫।

নরওয়েতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২৯, ডেনমার্কে ৫১৪, নেদারল্যান্ডে আক্রান্ত ৫০৩ এবং মৃত্যু ৫, সুইডেনে আক্রান্ত ৫শ, মৃত্যু ১, যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ৪৫৬ এবং মৃত্যু ৮, বেলজিয়ামে আক্রান্ত ৩১৪ এবং মৃত্যু ৩, কাতারে আক্রান্ত ২৬২, অস্ট্রিয়ায় ২৪৬, বাহরাইনে ১৯৫, সিঙ্গাপুরে ১৭৮, মালয়েশিয়ায় ১৪৯, অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্ত ১৩৯ মৃত্যু ৩।

এছাড়া হংকংয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ১২৬ এবং মৃত্যু ৩, কানাডায় আক্রান্ত ১০৯ এবং মারা গেছে একজন, গ্রিসে আক্রান্ত ৯৯, ইসরায়েলে ৯৭, চেক প্রজাতন্ত্রে আক্রান্ত ৯৪, আইসল্যান্ডে ৮৫, আরব আমিরাতে ৭৪, কুয়েতে ৭২, ইরাকে আক্রান্ত ৭১ এবং মৃত্যু ৭, মিসরে আক্রান্ত ৬৭ এবং মৃত্যু ১।

সান মারিনোতে আক্রান্ত ৬২ এবং মৃত্যু ২, ভারতের আক্রান্ত ৬২, লেবাননে আক্রান্ত ৬১ এবং মৃত্যু ২, থাইল্যান্ডে আক্রান্ত ৫৯ এবং মৃত্যু ১, ফিনল্যান্ডে ৫৯, পর্তুগালে ৫৯, স্লোভেনিয়ায় ৫৭, ব্রাজিলে ৫২, ফিলিপাইনে আক্রান্ত ৪৯ এবং মৃত্যু ২, তাইওয়ানে আক্রান্ত ৪৮ এবং মৃত্যু হয়েছে একজনের।

অপরদিকে রোমানিয়ায় আক্রান্ত ৪৭, সৌদি আরবে ৪৫, আয়ারল্যান্ডে আক্রান্ত ৪৩ এবং মৃত্যু ১, ভিয়েতনামে ৩৮, ইন্দোনেশিয়ায় আক্রান্ত ৩৪ এবং মৃত্যু ১, পোল্যান্ডে ৩১, ফিলিস্তিনে ৩০, জর্জিয়ায় ২৪, চিলিতে ২৩, কোস্টারিকায় ২২, আলজেরিয়ায় ২০, রাশিয়ায় ২০, আর্জেন্টিনায় আক্রান্ত ১৯ এবং মৃত্যু ১।

ক্রোয়েশিয়ায় ১৯, পাকিস্তানে ১৯, ওমানে ১৮, ইকুয়েডরে ১৭, পেরুতে ১৭, এস্তোনিয়ায় ১৬, আলবেনিয়ায় আক্রান্ত ১৫ এবং মৃত্যু ১, হাঙ্গেরিতে আক্রান্ত ১৩, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৩, মেক্সিকোতে ১২, সার্বিয়ায় ১২, আজারবাইজানে ১১, ব্রুনেইতে ১১, ম্যাকাউতে ১০, লাটভিয়ায় ১০, স্লোভাকিয়ায় ১০, বেলারুসে ৯, কম্বোডিয়ায় ৯, পানামা ও মালদ্বীপে ৮ জন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

অপরদিকে বুলগেরিয়া, আফগানিস্তান, লুক্সেমবার্গ, উত্তর মেসিডোনিয়া, তিউনিসিয়া, বসনিয়ায় ৭ জন করে, মরক্কো, সাইপ্রাস, মালটায় ৬ জন করে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, নিউজিল্যান্ড, ফেঞ্চ গুয়েনা, প্যারাগুয়েতে ৫ জন করে, সেনেগালে ৪, কম্বোডিয়া, লিথুনিয়া, বাংলাদেশ, কিউবা, মার্টিনিক, মলদোভায় ৩ জন করে, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, বলিভিয়া, বুরকিনা ফাসো, ক্যামেরুন, চ্যানেল আইসল্যান্ড, ফায়েরো আইসল্যান্ড, হন্ডুরাস, জ্যামাইকা এবং সেইন্ট মার্টিনে ২ জন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

আন্দোরা, আর্মেনিয়া, জর্ডান, লিথুনিয়া, মোনাকো, নেপাল, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, তিউনিসিয়া, ইউক্রেন, ভুটান, কোস্টারিকা, ভ্যাটিকান সিটি, গিব্রালটার, সার্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং টোগো এবং তুরস্কে একজন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।