করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে ঘটে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ১০ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দিতে গড়ে প্রায় ৫ দিন সময় লাগে। এমন তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কোভিড-১৯ রোগটির কারণে জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। রোগটি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে চীনসহ অন্যান্য দেশের আক্রান্তদের নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি দল।

বিবিসির প্রতিবেদনে অনুযায়ী তারা বলছেন, ৫ দিন বা এর আশপাশের দিনগুলোতেই মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয়। করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকলেও যাদের মধ্যে ১২ দিন পর্যন্ত কোন উপসর্গ দেখা দেয় না তাদের আর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তবে তখনও তারা ভাইরাসটির বাহক হিসেবে কাজ করেন এবং তাদের কাছ থেকে অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, যারা ভাইরাসটির বাহক বা সংক্রামক তাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা যাক আর না যাক, তারা যেন ১৪ দিন স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে থাকেন।

এটা করা হলে তাদের মাধ্যমে অন্য কেউ আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি আর থাকে না। তারা যদি এই নির্দেশনা মেনে চলেন—তাহলে ধারণা করা হচ্ছে যে, যদি ১০০ জনকে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় তাহলে বের হয়ে আসার পর তাদের মধ্যে অন্তত একজনের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয়।

এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন নামে একটি চিকিৎসা বিষয়ক জার্নালে। এরইমধ্যে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে এই নির্দেশনা মেনে চলা হচ্ছে।

Coronavirus-1

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর প্রধান গবেষক অধ্যাপক জাস্টিন লেসলার বলেন, ১৮১ টি নমুনা বিশ্লেষণ করে পাওয়া এই তথ্য এখন পর্যন্ত দ্রুত সময়ে পাওয়া সবচেয়ে যথার্থ অনুমান। তবে ভাইরাসটি নিয়ে এখনো আরও অনেক কিছু জানার বাকি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সর্বোপরি কতজন মানুষের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে এই গবেষণায় সেটি পরিমাপ করা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয় তারা মৃদু সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে থাকে। অনেকে উপসর্গ প্রতিরোধী হয়ে থাকে অর্থাৎ তার মধ্যে ভাইরাস থাকলেও কোন উপসর্গ দেখা দেয় না।

কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই রোগটি মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী হয়ে দেখা দিতে পারে—বিশেষ করে বয়স্ক এবং যাদের মধ্যে আগে থেকেই স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে এই শঙ্কা থাকে বেশি।

Coronavirus-2

ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের মলিকুলার ভাইরোলজির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জোনাথন বল বলেন, গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাইরাসটির উন্মেষ পর্ব ১৪ দিন থাকে এবং এ কারণেই কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন রাখার কথা বলা হয়।

আর আশার কথা হচ্ছে, ‘উপসর্গ প্রতিরোধী অবস্থায় থাকাকালীন কোন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে প্রমাণ থাকলেও তা খুবই নগণ্য।’ তবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার এবং সংক্রমণ প্রতিহত করার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে:

  • আক্রান্তদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
  • চোখ, নাক এবং মুখে অপিরস্কার হাত না দেয়া
  • হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার করা এবং সেটা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে হাত ধুয়ে ফেলা
  • সাবান এবং পানি দিয়ে বার বার হাত ধোয়া।

সূত্র: বিবিসি

এসএ/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।