রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ
ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। বসন্ত উৎসবে ক্যাম্পাসে অশ্লীলতার নৈতিক দায় নিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার রাতেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন উপাচার্য। পদত্যাগপত্রের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ও উচ্চ শিক্ষা দফতরের সচিব আর এস শুক্লার কাছেও। তবে উপাচার্যের পদত্যাগপত্র এখনই গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সম্পূর্ণ ঘটনা না জেনে সব্যসাচীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি টি রোড ক্যাম্পাসে বসন্ত উৎসব পালিত হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন তরুণ-তরণীর পিঠে ও বুকে আঁকা ছিল অশ্লীল শব্দ। যা ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় প্রবল সমালোচনা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে’ গানকে বিকৃত করে ইউটিউবার রোদ্দুর রায় অনলাইনে ছড়িয়েছিলেন। বিকৃত করা গানে ‘চাঁদ উঠেছিল গগনে’ লাইনের আগে অশ্লীল শব্দ যোগ করেছিলেন রোদ্দুর রায়। সেই অশ্লীল শব্দই দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের শরীরে।
কেবল আঁকাআঁকিতেই শেষ হয়নি, বিকৃত ওই গান গেয়েই ছাত্র-ছাত্রীরা নেচে বেড়িয়েছেন পুরো ক্যাম্পাস। এমনকি যেখানে যেখানে আবীরের রঙ মেখেছেন, সেখানেও তারা দেখিয়েছেন অশ্লীতার চরম পন্থা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সচেতন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দাবি উঠেছে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।
চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সামনে আসে ওই তরুণ-তরুণীদের পরিচয়। জানা যায় তারা কেউই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। বিতর্কের মাঝেই শুক্রবার পাঁচ অভিযুক্ত ক্ষমা চাইতে হাজির হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। মুখ ঢেকে বসে থাকতে দেখা যায় ওই তরুণ-তরুণীদের।
রবীন্দ্রভারতীতে এমন ঘটনার পরই এর দায় নেন উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির পরিপন্থী কাজ করার চেষ্টা করেছে কিছু শিক্ষার্থী। এরা কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী নন। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অবশেষে শুক্রবার রাতেই অশ্লীলতাকাণ্ডে নৈতিক দায় স্বীকার করে ইস্তফা দেন উপাচার্য। তার পদত্যাগের প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পদত্যাগ গ্রহণ করা হবে না। তিনি বলেন, উপাচার্য কেন পদত্যাগ করেছেন তা আমি জানতে চাই।
টিটিএন/এমকেএইচ