এইডসের ওষুধ খেয়েই সুস্থ হলেন স্পেনের করোনা রোগী
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৮৫ জনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। বিভিন্ন দেশে ৯৫ হাজার ৪৮১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করতে অন্তত ১৮ মাস সময় লেগে যাবে।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী এইডস (এইচআইভি) রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ খেয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছেন।
মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল বেনিটেজ (৬২) নামের ওই রোগী এখন পুরোপুরি সুস্থ। তিনি দেশটির সেভিল শহরের ভার্জেন ডেল রোসিও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে লোপিনাভির-রিতোনাভির নামের ওষুধ নিয়েছেন মিগুয়েল। কালেত্রা ব্র্যান্ডের এই ওষুধটি এইডস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্রায় এক দশক ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
লোপিনাভির-রিতোনাভির নামের এই ট্যাবলেট রক্তে ভাইরাসের বংশবিস্তার রোধ বিশেষভাবে কার্যকর। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনাভাইরাস ফুসফুসে ব্যাপকভাবে বংশবিস্তারের সুযোগ পেলে তখন প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
জ্বর দিয়ে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হালকা ঠাণ্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর এই কয়েক মাসে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে আঘাত হেনেছে।
শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৩০ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১২ জনের। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৫ জন।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৯ এবং মৃত্যু হয়েছে ১০৭ জনের।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানেও এই ভাইরাসের প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯২২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাপানে নোঙ্গর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৭০৬ যাত্রী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৬ জন। অপরদিকে, জাপানের বিভিন্ন স্থানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩১ এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
ফ্রান্সে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ২৬২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২২৮ এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১৫৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১১ জন, সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ১১২, হংকংয়ে ১০৩ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ২ জন, সুইজারল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩, যুক্তরাজ্যে ৮৭, নরওয়েতে ৫৯, কুয়েতে ৫৬, বাহরাইনে ৫২, সুইডেনে ৫২, অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০, মৃত্যু ২, মালয়েশিয়ায় আক্রান্ত ৫০, থাইল্যান্ডে ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ১ জন মারা গেছে।
তাইওয়ানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ এবং মৃত্য ১, নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ৩৮, ইরাকে আক্রান্ত ৩৫ এবং মৃত্যু ২, কানাডায় আক্রান্ত ৩৪, অস্ট্রিয়ায় ২৯, ভারতে ২৯, আরব আমিরাতে ২৮, আইসল্যান্ডে ২৬, বেলজিয়ামে ২৩, আলজেরিয়ায় ১৭, সান মেরিনোতে আক্রান্ত ১৬ এবং মৃত্যু ১, ভিয়েতনামে আক্রান্ত ১৬, ডেনমার্কে ১৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
ইসরায়েলে আক্রান্ত ১৫, লেবাননে ১৫, ওমানে ১৫, ম্যাকাউতে ১০, ক্রোয়েশিয়ায় ১০, ইকুয়েডরে ১০, গ্রিসে ৯, কাতারে ৮, ফিনল্যান্ডে ৭, বেলারুসে ৬, আয়ারল্যান্ডে ৬, মেক্সিকোতে ৬, পর্তুগালে ৬, রোমানিয়ায় ৬, পাকিস্তানে ৫, সেনেগালে ৪, ফিলিপাইনে আক্রান্ত ৩ এবং মৃত্যু ১, আজারবাইজানে আক্রান্ত ৩, ব্রাজিলে ৩, জর্জিয়ায় ৩, নিউজিল্যান্ডে ৩, রাশিয়ায় ৩ এবং চিলিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩।
মিসরে আক্রান্ত ২, এস্তোনিয়ায় ২, ইন্দোনেশিয়ায় ২, সৌদি আরবে ২, হাঙ্গেরিতে ২, আফগানিস্তানে ১, আন্দোরে ১, আর্মেনিয়ায় ১, কম্বোডিয়ায় ১, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে ১, জর্ডানে ১, লাটভিয়ায় ১, লিথুনিয়ায় ১, লুক্সেমবার্গে ১, মোনাকোতে ১, মরক্কোতে ১, নেপালে ১, নাইজেরিয়ায় ১, উত্তর মেসিডোনিয়ায় ১, সান মেরিনোতে ১, সৌদি আরবে ১, শ্রীলঙ্কায় ১, তিউনিসিয়ায় ১ এবং ইউক্রেনে ১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এসআর/এমকেএইচ