করোনাভাইরাসের ‌‘সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে’ বিশ্ব : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১২ এএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির ঝুঁকি নির্ণয়ে এটি সর্বোচ্চ ধাপ। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এই ঘোষণা দেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ড. টেড্রস অ্যাডহানম বলেন , ‘এই জিনিসটি (করোনাভাইরাস) এখন যেকোনো দিকে মোড় নিতে পারে। এর যে ঝুঁকি সেটাকে আমরা দুর্বল করে দিতে পারছি না। এজন্য আজ আমরা বলছি, করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক ঝুঁকি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আগে আমরা বলেছি, উচ্চ ঝুঁকি। এখন বলছি সর্বোচ্চ ঝুঁকি।’

তিনি আরও বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ভাইরাস চিহ্নিত করা যাচ্ছে এখনও। তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মেলেনি।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সিস প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক ডা. মাইক রায়ান বলেছেন, ‌‘করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ও প্রভাবের দিক দিয়ে আমরা এখন সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে অবস্থান করছি।’

প্রতিটি রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‌‘এটা এখন বাস্তবতা যে, প্রতিটি রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে : জেগে ওঠো। তৈরি হও। হয়তো এই ভাইরাস আপনার দেশের দিকেই ধেয়ে আসছে এবং এজন্য আপনার প্রস্তুতি দরকার। এ বিষয়ে নাগরিকদের জন্য আপনাদের করণীয় রয়েছে।’

বিশ্বব্যাপী ৫৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮৫৮ জনের। আক্রান্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ৩৭৯ জন। অপরদিকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৪৩৬ জন।

করোনাভাইরাসে শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত হয়েছে ৭৮ হাজার ৮২৪ জন, মারা গেছে ২ হাজার ৭৮৮ জন। অপরদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২২ এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের।

ইরানে করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে অন্তত ২১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ইরানের নারী ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসৌমেহ এবতেকার আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অন্যদিকে চীন সফর করে যাওয়ার পর মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট খলতমা বাতুলগা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সগবাটার দামদিনকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে (ভাইরাস সংক্রমণরোধে আলাদাভাবে রাখা) পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মন্তসেম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে সফর করে আসা অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও একইভাবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

সবমিলিয়ে যতই দিন যাচ্ছে করোনা আতঙ্ক ততই বাড়ছে। এখনও এই ভাইরাস মোকাবিলা করতে পারছে না বিশ্ববাসী। এ পরিস্থিতি ‘বৈশ্বিক মহামারীর’ আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, বেলারুশ ও লিথুয়ানিয়াও নিজেদের দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া-কোনো মহাদেশ বাদ যায়নি এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে।

এসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।