‘ভারতে সহিংসতা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৮ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান প্রাণঘাতী সহিংসতা বন্ধে এখনই ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

গত রোববার থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধীদের সঙ্গে দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কর্মী সমর্থকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজধানী নয়াদিল্লির বিভিন্ন অংশ। এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২১ জনের প্রাণহানি ও আরও দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষকবলিত এলাকার কয়েকটি মসজিদে ভাঙচুর ও মুসলিমদের বাড়িঘর-দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

টুইটে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, আজ আমরা দেখছি, একশো কোটির বেশি মানুষের একটি পারমাণবিক সশস্ত্র দেশ নাৎসিবাদে অনুপ্রাণিত আরএসএস মতাদর্শের দখলে চলে গেছে। যখন বর্ণবাদী মতাদর্শ ঘৃণার পাটাতনে দাঁড়ায় তখন তা রক্তপাতের দিকে যায়।

Delhi

ইমরান খান বলেন, তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন যে, বোতল থেকে একবার জ্বিন বেরিয়ে গেলে তা ভয়াবহ রক্তপাত ঘটাবে।

‘ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর ছিল এর সূচনা। এখন ভারতের ২০ কোটি মানুষের টার্গেটে পরিণত হয়েছে।এটি থামাতে এখনই বিশ্ব সম্প্রদায়কে কাজ করতে হবে।’

ভারতের রক্তাক্ত সহিংসতা নিয়ে একাধিক টুইট করেছেন পাক এই প্রধানমন্ত্রী। এক টুইটে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুরা পাকিস্তানের অন্যান্য নাগরিকদের মতোই সমান। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু অমুসলিম এবং তাদের ধর্মীয় স্থাপনা যাতে টার্গেটে পরিণত না হয় সেজন্য নাগরিকদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে বলে টুইটে জানান ইমরান খান।

Delhi

তিনি বলেন, আমি দেশের জনগণকে সতর্ক করে দিতে চাই যে, পাকিস্তানে আমাদের অমুসলিম নাগরিক এবং তাদের ধর্মীয় স্থাপনা কেউ টার্গেট করলে তা কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে। আমাদের সংখ্যালঘুরা এই দেশের অন্য নাগরিকদের মতোই সমান।

গত তিনদিন ধরে দিল্লিতে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চললেও এ নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বুধবার নীরবতা ভেঙে এক বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।

এক টুইটে মোদি বলেছেন, তিনি বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শান্তি এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য পুলিশ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো মাঠে থেকে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী।

Delhi

টুইটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নৈতিকতার ভিত্তি হলো শান্তি এবং সম্প্রীতি। আমাদের দিল্লির ভাই এবং বোনদের প্রতি শান্তি এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, বুধবার সকালের নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লিতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দিল্লির অন্যান্য অংশেও কারফিউ জারি করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডে বলছে, নয়াদিল্লির মৌজপুর, জাফরাবাদ, চাঁদবাগ ও কারাওয়াল নগর এলাকায় কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। সহিংসতায় বিধ্বস্ত এলাকায় কারফিউ উপেক্ষা করে কেউ রাস্তায় নামলে দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস ভারতের সহিংসতায় গভীর দৃষ্টি রাখছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফার্স্ট পোস্ট।

এসআইএস/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।