হিন্দু প্রমাণ দিতে দিল্লির বাড়িতে-বাড়িতে গেরুয়া পতাকা
বিক্ষোভ-সংঘাতে বিধ্বস্ত ভারতের উত্তর-পূর্ব দিল্লির চেহারা যেন রাতারাতি বদলে গেছে। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) পক্ষে থাকা লোকজনের সঙ্গে বিরোধীদের গত তিনদিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
দিল্লির বেশ কিছু মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মুসলিমদের ওপর আকস্মিক হামলা চালানো হচ্ছে এবং তাদের মারধর করা হচ্ছে। ফলে সেখানকার মুসলিমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে ভজনপুরা, গৌতমপুরী এবং মৌজপুরের আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দারা বাড়ির বাইরের দেওয়াল, প্রধান দরজা এমনকি বারান্দাতেও লাগিয়ে রাখছেন গেরুয়া পতাকা। এভাবেই তারা নিজেদের হিন্দু বলে প্রমাণ করছেন যেন হামলার শিকার হতে না হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভজনপুরার এক বাসিন্দা বলেন, সহিংসতার হাত থেকে বাঁচার জন্য এই এলাকার প্রতিটি হিন্দু বাড়ি এবং দোকানের গায়ে গেরুয়া পতাকা লাগানো হয়েছে। যদিও এই এলাকা হিন্দু প্রধান, তবুও কয়েকজন মুসলিমেরও দোকান রয়েছে। সেগুলো সব পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এতদিন যারা এই মুসলিমদের প্রতিবেশী ছিলেন তারাই পুড়ে যাওয়া দোকান থেকে জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। মৌজপুরের বাসিন্দা পৃথ্বি সিং বলেন, তারা নিশ্চিত নন যে, সবাই নিজে থেকেই এসব পতাকা বাড়িতে লাগিয়েছেন নাকি কোনও গোষ্ঠী এর পেছনে রয়েছে। তবে প্রত্যেকটি পতাকার আকার-আকৃতি একরকম দেখতে।
ভজনপুরা এবং নিউ সিলামপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যারা এসব এলাকায় প্রতিহিংসা ছড়াচ্ছেন তারা কেউই স্থানীয় নয়। সহিংসতা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে বাইরে থেকে তাদের এসব শহরে আনা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তারা নিজে চোখে দেখেছেন যে, যমুনা বিহারের প্রধান সড়কের কাছে ট্রাকে করে ইঁট-পাথর নিয়ে আসা হয়েছে।
দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার রাতে জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, কারওয়াল নগরে সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া পুরো উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে আগামী এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। দিল্লি-সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
টিটিএন/এমএস