করোনা : চীনে আক্রান্ত কমলেও সতর্কতা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ে। তবে চীনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহানের বাইরে বিভিন্ন শহরে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, এ বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়াটা ঠিক হবে না। কারণ এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। নতুন করে অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে।
চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ। মারা গেছেন অন্তত দুই হাজার ৪৬২ জন। এর মধ্যে চীনের বাইরে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জন। চীনের স্বাস্থ্য কমিশন রোববার নিশ্চিত করেছে যে, নতুন করে দেশটিতে আরও ৬৪৮ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
তবে হুবেই প্রদেশের বাইরে নতুন করে মাত্র ১৮ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এক মাস আগে কর্তৃপক্ষ হুবেই প্রদেশের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রকাশ করতে শুরু করার পর এটাই সর্বনিম্ন সংখ্যা।
তবে চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। রোববার পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় চারজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। অপরদিকে নতুন করে আরও ১২৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫৬ জন।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৭৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে দু'জন। অপরদিকে, ইরানে নতুন করে আরও ১০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৯। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন।
চীনে সফর না করেও বিভিন্ন দেশে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশেষ করে চীনে সফর করেননি বা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন কারো সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন ব্যক্তিরাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের। সে কারণে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর নয় হাজারেরও বেশি সদস্যকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই সম্প্রদায়ে ৬১ বছর বয়সী এক নারী প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়। দেগু শহরে আক্রান্ত ওই নারীর চীনে সফরের কোনো রেকর্ড নেই। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ওই নারী প্রথম জ্বরে আক্রান্ত হন। পরে তার শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। দেশটির দেগু এবং চোংডো শহর থেকেই এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে।
চীনের বাইরে ২৮টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে তুলনামূলক দুর্বল ব্যক্তিদের সহজেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশই তেমন গুরুতর নয়। তবে ২০ শতাংশের অবস্থা গুরুতর।
টিটিএন/পিআর