চীনের বাইরে বিপদ বাড়াচ্ছে করোনা, ইতালি-ইরানে ২ জনের মৃত্যু
চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে এলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিস্থিতি গুরুতর আকার ধারণ করছে। মানুষ থেকে মানুষে এ ভাইরাসের বিস্তারে নতুন মাত্রা যোগ হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মাঝেই শনিবার ইরান এবং ইতালিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও কমপক্ষে দুজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এখন পর্যন্ত ইতালিতে মোট ৩০ ও ইরানে ২৮ জনের শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, শনিবার ইরানে নতুন করে ১০ জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচজনে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুস জাহানপোর বলেন, আমরা নতুন করে ১০ জনের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত নতুন আক্রান্তদের একজন মারা গেছেন।
দেশটির কোন অঞ্চলে নতুন এ আক্রান্ত ব্যক্তি মারা গেছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেননি ইরানি এই কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, নতুন করে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে আটজন কম শহরে ও দু'জন তেহরানের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে গত ৩১ ডিসেম্বর নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি নিশ্চিত হলেও ইরানে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয় গত বুধবার। ওইদিন ইরানের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দেশটির রাজধানী তেহরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শিয়া অধ্যুষিত কম শহরে দু'জন বয়স্ক ব্যক্তি করোনায় মারা যান।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাস আগে হানা দিলেও প্রথম প্রাণ কাড়ে ইরানে। জাহারপোর বলেন, গত বুধবার থেকে এখন পর্যন্ত ইরানে ৭৮৫ জনের শরীর পরীক্ষা করা হয়েছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই কম শহরের বাসিন্দা অথবা সম্প্রতি তারা কম থেকে অন্যান্য শহর ভ্রমণ করেছেন।
ইরানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় কুয়েতের জাতীয় বিমান সংস্থা কুয়েত এয়ারওয়েজ দেশটিতে বিমান চলাচল স্থগিত ঘোষণা করেছে।
এদিকে ইউরোপের দেশ ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দ্বিতীয় এক নারীর প্রাণহানি ঘটেছে। স্থানীয় সংবাদসংস্থা আনসা'র বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইতালিতে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
আনসা বলছে, মারা যাওয়া দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত ওই নারী মিলান শহরের লম্বার্ডি অঞ্চলের বাসিন্দা। ভেনেতো অঞ্চলের পাদুয়া এলাকায় ৭৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ওই নারীর প্রাণহানির খবর এসেছে।
৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়। সেই সময় থেকে দেশটিতে প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, শুধু চীনেই এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৩৪৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ২৮৮ জন। চীনের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪০ জন এবং মারা গেছেন ১৭ জন।
এসআইএস/এমকেএইচ