বেশি নম্বর পেতে উত্তরপত্রে ১০০ রুপি গুঁজে দিতে বললেন শিক্ষক
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পেতে উত্তরপত্রে টাকা গুঁজে দেয়ার ঘটনা হয়তো বাংলাদেশে ঘটেনি। তবে ভারতে এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। দেশটির উত্তরপ্রদেশের লৌক্ষ্ণ থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে মউ জেলার একটি বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজার ও প্রধান শিক্ষক প্রবীণ মল সম্প্রতি ছাত্রদের এমন পরামর্শ দেন। শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের অসৎ পরামর্শ দেয়ায় গোটা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শুরু হয়েছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর আগে ওই শিক্ষক ভালো ফলাফল অর্জনে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি উত্তরপত্রে রুপি গুঁজে দেয়াসহ নকল রোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপকে কীভাবে ফাঁকি দেয়া যায় তার উপায় বাতলে দেন শিক্ষার্থীদের।
তার এ বক্তব্য গোপনে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তারই এক ছাত্র। পরে ওই ছাত্র ভিডিওসহ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে অভিযোগ জানালে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ শিক্ষক প্রবীণ মলকে আটক করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, পরীক্ষায় কীভাবে প্রতারণা করা যায় এবং রাজ্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপকে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সে সম্পর্কে বক্তব্য দিচ্ছেন ওই শিক্ষক।
প্রবীণ মল বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি আমার কোনো শিক্ষার্থী কখনও ব্যর্থ হবে না। তোমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তোমরা পরীক্ষার হলে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে পারবে, তবে কারো হাত স্পর্শ করবে না। ভয় পাবে না। সরকারি স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষকরা আমার বন্ধু। এমনকি যদি ধরাও পড় এবং কেউ একটি বা দু’টি চড় মারেন, এতে ভয় পাবে না। নীরবে সহ্য করবে’।
এ সময় ওই শিক্ষকের বক্তব্যকে সমস্বরে শিক্ষার্থীরা সমর্থন করে। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রশ্নের উত্তর তোমরা বাদ দেবে না। উত্তরপত্রে কেবল ১০০ রুপির নোট গুঁজে দেবে। শিক্ষকরা চোখ বুঝে নম্বর দেবেন। যদি কোনো প্রশ্নের ভুল উত্তরও দাও, তাহলে এ টাকার জোরে তোমাদের মাত্র এক নম্বর কাটা যাবে’।
ক্লাসে এসব বক্তব্য শেষে ওই শিক্ষককে জয় হিন্দ, জয় ভারত স্লোগান দিতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ৫৬ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। পরীক্ষার হলে সবধরনের নকল বা অসদুপায় বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সর্ষের মধ্যেই যে ভূত লুকিয়ে রয়েছে তা প্রমাণিত হলো আরও একবার।
এমএফ/এমআরএম/এমকেএইচ