করোনা সংকট কাটাতে বাজেটে বড় প্রণোদনা রাখবে সিঙ্গাপুর
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে বড় সংকটে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাণিজ্যপ্রধান শহর সিঙ্গাপুরেও যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস আতঙ্ক। ইতোমধ্যে ধস নেমেছে দেশটির পর্যটন খাতে। ভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এই সংকট কাটিয়ে অর্থনীতিকে ফের চাঙা করতে আগামী বাজেটে বড় প্রণোদনা রাখতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর সরকার।
চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধে সংকটে পড়া অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে এ বছরের শুরুতেই বিশেষ প্রণোদনার পরিকল্পনা করছিল সিঙ্গাপুর। এর মধ্যেই শুরু হয় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নগররাষ্ট্রটির অন্তত ৬০ জনের শরীরে ধরা পড়েছে এই ভাইরাস।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, করোনা সংক্রমণ এড়াতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজারেরও বেশি পর্যটক হারাচ্ছে সিঙ্গাপুর। সেখানে এবারের অর্থনৈতিক ক্ষতি সার্স মহামারিকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ওভারসি-চাইনিজ ব্যাংকিং কর্পের গবেষণা ও পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান সেলেনা লিং জানান, করোনাভাইরাসের কারণে সিঙ্গাপুরে এ বছরের জিডিপি ০.৫ শতাংশ থেকে এক শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
ব্লুমবার্গ পরিচালিত এক জরিপে ১০ জনের মধ্যে নয় বিশ্লেষকই জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলা ও এর সংক্রমণ প্রতিরোধে গৃহীত ব্যবস্থা এবং সিঙ্গাপুরের বাণিজ্যকে ফের চাঙা করতে অবশ্যই বিশেষ প্রণোদনা প্রয়োজন। আর সেই পথেই যাচ্ছে অঞ্চলটি।
সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী লরেন্স ওং গত ১২ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের কারণে এবারের বাজেটে ‘শক্তিশালী প্রণোদনা প্যাকেজ’ আসছে। তবে এই প্যাকেজের আওয়তায় কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হবে তা জানাননি তিনি।
সিটি গ্রুপের অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ভাইরাস মোকাবিলায় বরাদ্দের পরিমাণ সাতশ’ সিঙ্গাপুরি ডলার হতে পারে। এতে পরিবহন ও পর্যটন খাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ থাকবে।
২০০২-০৩ সালে সার্স সংকট মোকাবিলায় ২৩০ মিলিয়ন সিঙ্গাপুরি ডলার বরাদ্দ দিয়েছিল তৎকালিন সরকার।
শনিবার ভাইরাসের উৎসস্থল চীনে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৫০০ জন, আর বিশ্বব্যাপী এ সংখ্যা ৬৯ হাজার ১৯৫ জন। এদিন মৃত্যুর মিছিলে সামিল হয়েছেন আরও ১৪২ জন।
ফলে শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬৫ জন। এছাড়া ফিলিপাইন, হংকং, জাপান ও ফ্রান্সে একজন করে মারা গেছেন। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য মতে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৬৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
সূত্র: জাপান টাইমস, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
কেএএ/এমএস