করোনাভাইরাস সংকটে বাতিল হলো ‘মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাতিল হলো এবারের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস (এমডব্লিউসি)। আগামী ২৪ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্পেনের বার্সেলোনা শহরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল বিশ্বের বৃহত্তম এ মোবাইল ফোন প্রদর্শনী। তবে বিটি, এলজি, নোকিয়া, সনি, ভোডাফোনের মতো বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ভাইরাস সংকটের মধ্যে প্রদর্শনীতে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয়ায় শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করতে বাধ্য হয় আয়োজক জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ)।

জিএসএমএ’র প্রধান নির্বাহী জন হফম্যান এক বিবৃতিতে বলেন, আয়োজক দেশ ও বার্সেলোনার নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে জানাচ্ছি যে, এমডব্লিউসি বার্সেলোনা-২০২০ বাতিল করেছে জিএসএমএ। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ভ্রমণ বিষয়ক দুশ্চিন্তাসহ অন্যান্য পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন অসম্ভব করে তুলেছে।

বাৎসরিক এই মোবাইল ফোন প্রদর্শনীতে প্রতিবার উপস্থিত হয় বিশ্বের লক্ষাধিক মানুষ, যার মধ্যে অন্তত ছয় হাজার আসে চীন থেকে। বিশ্বের বড় বড় সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়ায় অর্থনীতিতে যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে এমডব্লিউসির।

কিন্তু এ সপ্তাহের শুরুতেই অ্যামাজন, সনি, এলজি ইলেক্ট্রনিক্স, এরিকসন, ফেসবুক, চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইনটেল ও এনভিডিয়া জানায়, তারা এবারের প্রদর্শনীতে আসছে না। ডয়েচে টেলিকম বলছে, আন্তর্জাতিক অতিথিদের এত বড় জমায়েতে কর্মীদের পাঠানো হবে ‘দায়িত্বহীন’ একটি কাজ। ফরাসি টেলিকম গ্রুপ অরেঞ্জের প্রধান নির্বাহী স্টিফেন রিচার্ড জিএসএমএ’র চেয়ারম্যান। প্রদর্শনীতে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তার প্রতিষ্ঠানও।

প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ওয়্যারড জানিয়েছে, স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির অনুরোধ জানিয়েছিল জিএসএমএ, যেন তারা এ প্রদর্শনী বাতিল করতে পারে। সংবাদমাধ্যমটির মতে, জিএসএমএ যদি নিজেরাই অনুষ্ঠান বাতিল করে তাহলে ইনস্যুরেন্সেও তাদের ক্ষতি পোষাবে না। তার চেয়ে স্বাস্থ্য সতর্কতার কারণে যদি এটি বাতিল করতে হয়, সেটাই বরং লাভজনক হতো।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। বুধবার চীনে এ ভাইরাসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪৪ জন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৭ জন।

হুবেই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রদেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১০ জন। চীনের মূল ভূখণ্ডে মোট মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে ১ হাজার ৩৫৫ জন। এছাড়া মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে হংকং ও ফিলিপাইনে দু’জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

বুধবার হুবেইতে আরও ১৪ হাজার ৮৪০টি ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে প্রদেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ২০৬ জন। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সূত্র: বিবিসি, সিএনএন

কেএএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।