করোনাভাইরাসে সহায়তা না করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

করোনাভাইরাস নিয়ে গোটা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে চীন সরকার। বেইজিং বলছে, করোনাভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নেতিবাচক। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র জরুরি জনস্বাস্থ্য সতর্কতা জারির পর ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করল বেইজিং।

শুক্রবার জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, বিগত দুই সপ্তাহে যেসব বিদেশি চীন ভ্রমণ করেছেন তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেবে না দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং বলেন, মার্কিন এই পদক্ষেপ শুধু আতঙ্ক তৈরি করেছে এবং তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে।

চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬১ জনে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রোববার যারা মারা গেছেন তাদের ৫৬ জনই ভাইরাসটির উৎসস্থল হুবেই প্রদেশের। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮২৯ জন। মোট ১৭ হাজার ২০৫ জন এখন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চীন যা বলছে
সোমবার এক নিউজ ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ভাইরাস মোকাবিলায় সহযোগিতার পরিবর্তে তারা আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে। প্রথম দেশ হিসেবে চীনা পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ দূতাবাস থেকে আংশিকভাবে কর্মী ফিরিয়ে নেয়ার কাজটিও করেছে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী মুখপাত্র চুনিয়াং বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক উন্নত দেশ মহামারি এই ভাইরাস প্রতিরোধে বেশ ভালো ক্ষমতা রাখলেও তারা উল্টো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সুপারিশের বিপরীতে গিয়ে অতিরিক্ত বিধি-নিষেধ আরোপ করার মতো নেতিবাচক কাজগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছে।’

বিবিসি বলছে, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে চীনা পর্যটকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির পরপরই অস্ট্রেলিয়াও চীনা পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে জানায়, সীমান্ত বন্ধ করলে অবৈধপথে সেসব দেশে কেউ ঢুকলে ভাইরাসটি আরও দ্রুত ছড়াবে।

ডিসেম্বরে হুবেই প্রদেশের উহান থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি। গত এক মাসের বেশি সময়ে বিশ্বের বিশটিরও বেশি দেশে তা ছড়িয়ে পড়েছে। চীন ছাড়াও এসব দেশে এখন পর্যন্ত ১৫০ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তবে চীনের বাইরে শুধু ফিলিপাইনে একজন মারা গেছে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।

যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে

গত ২৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র চীনের উহানে অবস্থানরত জরুরি নয় এমন সব মার্কিন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়। তার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে জরুরি নয় এমন সব মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার-আত্মীয়দের চীন থেকে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার নির্দেশ দেয়া হয়।

চীনে উৎপত্তি হওয়া এই ভাইরাস মোকাবিলা ও এর বিস্তার ঠেকাতে গত ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন ঘোষণার পর চীন থেকে মার্কিন কর্মীদের পরিবারের অনূর্ধ্ব ২১ বছর বয়সীদের দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশে ফেরার পর এসব মার্কিনীকে ১৪ দিন ‘কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হচ্ছে।

এসএ/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।