লাগামহীন করোনাভাইরাসে আতঙ্ক, চীনের শেয়ারবাজারে ধস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। রোববার পর্যন্ত এতে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬১ জনে, এর মধ্যে একজন ফিলিপাইনে, বাকি সবগুলোই চীনে। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় ১০ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার খুলেছে চীনের শেয়ারবাজার। তবে দিনের শুরুতেই বড় ধসের মুখে পড়েছে।

সোমবার দিনের প্রথম ভাগে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ (এসএসই) কম্পোজিটের সূচক পড়ে গেছে প্রায় আট শতাংশ, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফলে ইতোমধ্যেই বাজার থেকে অন্তত ৩৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হারিয়ে গেছে বলে ধারণা বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। বছরের সবচেয়ে দুর্বলতম অবস্থান থেকে লেনদেন শুরু করেছে ইউয়ান। চীনে লোহা, তেল ও তামার দামও পড়ে গেছে স্বাভাবিকের নিচে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় শেয়ার, বন্ড, ইউয়ানসহ পণ্য বাজারের লেনদেনে বড় আঘাতের আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও তারল্য সংকট কাটাতে সোমবার ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বাজারে ছেড়েছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া, যেসব প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ পণ্য উৎপাদন করে তাদের কাজ যত দ্রুত সম্ভব শুরু করতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বেইজিং।

এশিয়ার বৃহত্তম তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান চীনের সিনোপেক জানিয়েছে, চলতি মাসে তারা তেল উৎপাদন কমিয়ে প্রতিদিন ছয় লাখ ব্যারেলে নামিয়ে আনবে; যা গত বছরের গড় উৎপাদনের মাত্র ১২ শতাংশের মতো।

গত ২৪ জানুয়ারি নববর্ষের ছুটিতে বন্ধ হওয়ার পর সোমবার চীনের শেয়ারবাজার খুললেও এখনও অবরুদ্ধ দেশটির অনেক শহর। ভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশে কর্মীদের আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কর্মস্থলে না যেতে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৬ জনই হুবেই প্রদেশের। সেখানে এখন পর্যন্ত মারা গেছে অন্তত সাড়ে তিনশ’ জন।

চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮২৯ জন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২০৫ জন। এছাড়া রোববার পর্যন্ত উহানে আরও ১ হাজার ৩৩ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। উহান থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী হুয়াগং শহরেও বেড়েছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। সেখানে নতুন করে ২৪৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে অন্তত দু'জন।

চীন ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে নতুন করে ১৭১ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চীন থেকে আগতদের ঠেকাতে এরই মধ্যে সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইসরায়েল। একই সিদ্ধান্ত নিছে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া, নেপালও। এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ২৪টি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যদিও তারা বলছে, এ পরিস্থিতির জন্য এখনই ভ্রমণ ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন নেই।

সূত্র: রয়টার্স

কেএএ/এমকেএইচ

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।