ইউরোপের সহায়তা চাইছে চীন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১১ এএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
ওষুধ সরবরাহের জন্য ইউরোপের কাছে সহায়তা চাইছে চীন। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ইউরোপকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং।
চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ চীন সফর করেছেন এমন বিদেশি নাগরিকদের তাদের দেশে ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে চীন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট আরসুলা ভন ডের লিয়েনের সঙ্গে ফোনে আলাপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী লি। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছ থেকে ওষুধ সরবরাহ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা তথ্য, নীতিমালা এবং প্রযুক্তির আদান-প্রদান জোরদার করতে চাই। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চাই।
এদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তিনশ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ২৭টি দেশে এই ভাইরাসে ১৪ হাজার ৫শ ৫১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, চীন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান। এছাড়া অনেক দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন থেকে আগতদের ওপর অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করে দিচ্ছে। নিউ ইয়র্কে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কীনা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে প্রথমবারের মতো একজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। প্রথমবারের মতো স্পেনেও একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সম্প্রতি চীন সফর করেছেন এমন সব বিদেশি পর্যটকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা এনেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া। এর আগে রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান এবং ইতালিও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?
এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।
সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা সবাই চীনের নাগরিক। অপরদিকে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৯৪ জনই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। শুধুমাত্র শনিবারই হুবেই প্রদেশে আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে, চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৫৯০ জন। শুধুমাত্র চীনেই এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৮০। অপরদিকে চীনের বাইরে প্রায় ১শ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
টিটিএন/জেআইএম