এবার রাশিয়া-যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের হানা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৪৫ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২০
যুক্তরাজ্যেল পর আজ শুক্রবার রাশিয়ায় প্রথমবারের মতো চীনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুজন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটির সহকারী প্রধানমন্ত্রী টাতিয়ানা গোলিকোভা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চীন সংলগ্ন রাশিয়ার একেবারে উত্তরের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পর দেশটির জন্য এই আশঙ্কার খবর আসল।
রুশ সম্প্রচারমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে অনুযায়ী সহকারী প্রধানমন্ত্রী গোলিকোভা সাংবাদিকদের বলেন, যে দুজন রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তারা উভয়ই চীনা নাগরিক। একজন উত্তরাঞ্চলীয় জাবাইকালাস্কি ও অপরজন পশ্চিম সাইবেরিয়ার তিউমেন অঞ্চলের। দুই স্থানের দূরত্ব আনুমানিক চার হাজার কিমি।
রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, করোভাইরাসে আক্রান্ত ওই দুই ব্যক্তিকে ব্যাপক সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাদের এমন স্থানে রাখা হয়েছে যাতে অন্য কোনো মানুষ তাদের সংস্পর্শে আসতে না পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের সেবা দিচ্ছেন।
সহকারী প্রধানমন্ত্রী টাতিয়ানা গোলিকোভা বলেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে তিন শতাধিক রাশিয়ান নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া চীনের হাইনান প্রদেশ থেকে আরও ২ হাজার ৬০০ রুশ পর্যটককে ফেরানোর কাজ চলছে।
করোভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনের সঙ্গে বেশিরভাগ ফ্লাইট বাতিল করেছে মস্কো। তবে ব্যাতিক্রম দেশটির বিমান পরিবহন সংস্থার রাশিয়া থেকে বেইজিং, সাংহাই, গুয়ানঝু এবং হংকংয়ের ফ্লাইট। এছাড়া চীনের যাত্রীবাহী বিমান রাশিয়ার রাজধানী শহর মস্কোর শেরেমতিয়েভো বিমানবন্দরে চলাচল করছে।
চীন থেকে বিশ্বের অন্তত ১৯ দেশে বিস্তারের পর শুক্রবার যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুজনকে শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা শুক্রবার এই ঘোষণা দিয়ে জানান, আক্রান্ত ওই দুই ব্যাক্তি একই পরিবারের সদস্য। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএইচএস) কর্তৃপক্ষের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাদের সেবা দিচ্ছেন।
হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে চীনের মূল ভূখন্ডে এখন পর্যন্ত ২১৩ জন মারা গেছেন। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় ১০ হাজার। যাদের বেশিরভাগে হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। এছাড়া চীনের বাইরে মোট ৯৮ জন এখন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মহামারি করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা নিয়ে চীন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে যে হিসাব দিয়েছে প্রকৃতপক্ষে ওই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে মৃতের কোনো রেকর্ড না রেখেই তড়িঘড়ি করে মরদেহগুলো সৎকার করার কাজ করছে চীন।
উহান শহরে মরদেহ সৎকারের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা বলছেন, হাসপাতাল থেকে তাদের কাছে সৎকারের জন্য যে মরদেহগুলো পাঠানো হচ্ছে তার বেশিরভাগের কোনো রেকর্ড রাখছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, উহান থেকেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি বিশ্বে বিস্তার লাভ করেছে।
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৃহস্পতিবার জেনেভায় এক জরুরি বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। তবে চীনের এই ভাইরাস মোকাবিলা করার সামর্থ আছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
এসএ/পিআর