করোনাভাইরাস আতঙ্ক কাটিয়ে উঠছে এশিয়ার শেয়ারবাজার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২০
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জেরে টানা কয়েকদিন দরপতনের পর অবশেষে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেল এশিয়ার শেয়ারবাজারে। শুক্রবার জাপানের নিক্কেইয়ের (এন২২৫) সূচক বেড়েছে প্রায় ১ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া হংকংয়ের হ্যাং সেং (এইচএসআই) সূচক বেড়েছে ০.৭ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কসপির সূচক বেড়েছে প্রায় ০.৩ শতাংশ।
এর আগে গত দুই দিনে হ্যাং সেং-এর সূচক পড়ে গিয়েছিল অন্তত পাঁচ শতাংশ। একই সময় নিক্কেই আর কসপি হারিয়েছিল অন্তত ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩ জনে, আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে নয় হাজারেরও বেশি। হুবেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, ফলে ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহান শহরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৪ জনে। চীন ছাড়া আরও অন্তত ১৮টি দেশে ধরা পড়েছে প্রতিষেধকবিহীন এই ভাইরাস। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সংকটের পাশাপাশি বিশ্বের অর্থনীতির জন্যেও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এর কারণে চীনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে এসেছে। শুক্রবার প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি মাসে দেশটির ক্রয় পরিচালক সূচক (পিএমআই) দাঁড়িয়েছে ৫০, যা গত মাসের চেয়ে অন্তত ০.২ শতাংশ কম। এছাড়া অনুৎপাদনশীল পিএমআই হয়েছে ৫৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
চীনের আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের অর্থনীতিবিদ মার্টিন লিঞ্জ রাসমুসেন বলেন, পিএমআই সাধারণত প্রতি মাসে কোনও অর্থনীতির প্রকাশিত প্রথম তথ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। চীনের জানুয়ারি মাসের পিএমআই বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি মাসের পিএমআই বলে দেবে, ভাইরাসটি কতটা ক্ষতি করছে।
গত ২০ জানুয়ারি শেষ হয়েছে পিএমআই জরিপ। একই দিন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে ভয়াবহ পরিস্থিতি বলে ঘোষণা করেন।
২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা এলজির পণ্য বিক্রি বেড়েছে। গত বছর তাদের বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৮ সালের চেয়ে অন্তত এক শতাংশ বেশি। তবে তাদের মুনাফা কমে গেছে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার।
প্রতিষ্ঠানটির লাভ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে তাদের স্মার্টফোন বিভাগের বাজে পারফরমেন্স। ২০১৯ সালে এলজির স্মার্টফোন বিক্রি কমে গেছে প্রায় ২১ শতাংশ। এছাড়া সিউলে তাদের শেয়ারের দামও কমেছে অন্তত ০.৭ শতাংশ।
করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ঠেকেছিল গত তিন মাসের মধ্যে সবনিম্ন পর্যায়ে। শুক্রবার সেখানেও উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) সিএলসি১-এর দর প্রতি ব্যারেলে ১ দশমিক ১ ডলার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ দশমিক ২৫ ডলার। আর ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৯০ সেন্ট বেড়ে হয়েছে ৫৯ দশমিক ১৯ ডলার।
সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স
কেএএ/টিটিএন/এমএস