করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মাস্ক কতটা কার্যকরী?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২০
চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছেই। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে সচেতনতাই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুকনো কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে। সেক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কিনা তা এখনো অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এশিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ধারণার চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকরভাবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সামান্য হাঁচি, কাশি, কফের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের এখনও কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। সে কারণে প্রতিরোধের মাধ্যমেই এই রোগ থেকে বেঁচে থাকার পথ খুঁজছে মানুষ। ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় মানুষজন ব্যাপকহারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার শুরু করেছে।
ফলে চীনের বিভিন্ন অংশে সার্জিক্যাল মাস্কের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। দেশটিতে ইতোমধ্যেই মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ, থার্মোমিটারের স্টক শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছে যে, শীতকালীন ছুটিতে চীন সফর শেষে দেশে ফিরে আসা দুই শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থীই মাস্ক পরা শুরু করেছেন।
ফেস মাস্ক আসলেই এই ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকরী কিনা সে বিষয়ে মিয়ামি ভ্যালি হসপিটালের চিকিৎসক রবার্টো কোলোন বলেন, এই মুহূর্তে আমরা জানি না যে, আক্রান্ত এলাকায় মাস্ক কার্যকরী কিনা। তবে সাধারণভাবে মাস্ক হাঁচি-কাশির জীবানুর বিস্তার রোধে সহায়তা করে।
বাতাসের মাধ্যমেও যেসব ভাইরাস ছড়ায় সেক্ষেত্রে একজন থেকে অন্যজনে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এই মাস্কগুলো আসলেই কাজ করছে কীনা সেটা আমরা এখনও জানি না।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস। চিকিৎসকরা বলছেন, মাস্ক পরা নিরাপদ কারণ এগুলো নিরাপদ, কোনো ধরনের আঘাত লাগে না, আর হয়তো এগুলো ভাইরাসের বিস্তার রোধে সহায়তা করতে পারে।
এই ভাইরাস বিপজ্জনক হয়ে উঠছে কারণ এ বিষয়ে এখনও ভালোভাবে জানা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে এ ভাইরাস কতটা বিপজ্জনক এবং এটা একজন থেকে আরেকজনের শরীরে কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এ বিষয়গুলো এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।
এখন পর্যন্ত এটা জানা সম্ভব হয়েছে যে, এ ভাইরাস থেকে নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এটা অনেক ভয়াবহ হতে পারে। অপরদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা আরও প্রবল হচ্ছে এবং সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
চীনে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকার। এছাড়া আরও এক হাজার ৭শ জন নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
হুবেই প্রদেশে আরও ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ন্যাশনাল হেলথ কমিশন। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো তিব্বতে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
টিটিএন/জেআইএম