করোনাভাইরাস: চীনে ২০০০ আউটলেট বন্ধ করল স্টারবাকস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে চীনে প্রায় অর্ধেক আউটলেট বন্ধ ঘোষণা করেছে জনপ্রিয় মার্কিন কফি কোম্পানি স্টারবাকস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত দুই হাজার আউটলেট বন্ধ রাখবে তারা।

চীনে প্রায় ৪ হাজার তিনশ আউটলেট রয়েছে স্টারবাকসের। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এটাই তাদের সবচেয়ে বড় বাজার। করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমাতে চীন সরকারের উদ্যোগে সহযোগিতার জন্যই এসব আউটলেট বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্টারবাকস। 

১৯৯৯ সালে চীনে প্রথমবার নিজেদের ব্যবসা শুরু করে স্টারবাকস। তাদের বিশ্বব্যাপী মুনাফার অন্তত ১০ শতাংশই আসে চীন থেকে। এরপরও সেখানে প্রায় অর্ধেক আউটলেট বন্ধ করার ঘোষণা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্ববাণিজ্যে সৃষ্ট সংকটের বড় উদাহরণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এর আগে, গত সপ্তাহে প্রথম মার্কিন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফেসবুক তাদের কর্মীদের চীন ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়। একইভাবে ভ্রমণ ও আউটলেট খোলা রাখার সময়সীমা সীমিত করেছে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল।

বুধবার জাপানি গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা জানিয়েছে, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনে তাদের সব কারখানা বন্ধ থাকবে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর তিয়ানজিন ও দক্ষিণের গুয়ানডং প্রদেশে টয়োটার বড় কারখানা রয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শহরে পরিবহন নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে টয়োটা।

এছাড়া, চীনের অনেক প্রতিষ্ঠানই কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছে। অনেকেই ছুটি বাড়িয়েছে। কেউ ভাইরাস সংক্রমিত এলাকা ভ্রমণ করলে তাকে আপাতত কর্মস্থলে না আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৩২ জন, আক্রান্ত প্রায় ছয় হাজার। 

চীন ছাড়াও ১৮টি দেশের অন্তত ৭৮ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চীনা গণমাধ্যম সিনহুয়ায় এক বিশেষজ্ঞের বরাতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করতে পারে।

এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এ ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে চীনে সফর করেছেন এমন লোকজনের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণে অনেক দেশই এ ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন সফরে নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এদিকে, প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে গবেষণাগারে করোনাভাইরাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন তারা।

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।

সেক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

কেএএ/টিটিএন/এমকেএইচ

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।