হ্যারি-মেগানকে জনসনের শুভেচ্ছা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:১৬ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২০

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান মারকেল রাজকীয় পদবি ছেড়ে দিচ্ছেন। প্রায় দুই সপ্তাহের টানাপোড়েনের পর গতকাল ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেস এ ঘোষণা দিয়েছে। রাজপ্রাসাদের ঘোষণা আসার পর হ্যারি-মেগানকে শুভেচ্ছা জানালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

লিবিয়া ইস্যুতে দশ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে এক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিস জনসন এখন বার্লিনে। সেখান থেকে তিনি বলেছেন, হ্যারি-মেগানের জন্য রাজপরিবার ঠিক একটা পথ বের করে দেবে, এ ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। তার কথায়, ‘আমার মনে হয় গোটা দেশ একসঙ্গে তাদেরকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুভেচ্ছা জানাতে চায়।’

মেগানের বাবা টমাস মারকেল অবশ্য ফের আঙুল তুলেছেন মেয়ের দিকেই। তার দাবি, গোটা প্রক্রিয়ায় রাজপরিবারেরই মর্যাদাহানি করেছেন মেগান। মেগানের সঙ্গে তার বাবার সম্পর্ক শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। বাবাকে লেখা চিঠির কারণে সম্প্রতি একটি মামলার জেরে মেগানকে আদালতে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হতে পারে।

রাজপ্রাসাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর রাজপরিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন হ্যারি এবং মেগান। ফলে ‘হিস অ্যান্ড হার রয়্যাল হাইনেস (এইচআরএইচ)’ উপাধি ছেড়ে দেবেন তারা। রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের প্রতিনিধিত্বও আর করবেন না এই দম্পতি।

বাকিংহাম প্যালেস গতকাল এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স এইচআরএইচ খেতাব ব্যবহার করবেন না। কারণ তারা রাজপরিবারের কর্মরত সদস্য থাকছেন না।’ তবে ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথের জন্য এতদিন পিন্স হ্যারি ও মেগান যে কাজ করেছেন, তার জন্য তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

রানি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হ্যারি, মেগান ও আর্চি (তাদরে পুত্র) বরাবরই আমার পরিবারের প্রিয় সদস্য হিসেবে থাকবে। গত দুবছরে তাদেরকে যে কড়া নজরদারির মধ্যে যেতে হয়েছে, তা আমি বুঝেছি। তারা একটা স্বাধীন জীবন চায়, তাতে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’

মার্কিন অভিনেত্রী ৩৮ বছর বয়সী মেগান সম্পর্কে রানি বলেন, ‘মেগান খুব দ্রুত পরিবারের একজন হয়ে উঠেছে। তার জন্য আমি গর্বিত। আমার গোটা পরিবারের আশা, এই চুক্তির পরে ওরা শান্তিপূর্ণ, সুখী জীবনযাপন করতে পারবে।’ রানির প্রতিনিধিত্ব না করলেও রানির শেখানো মূল্যবোধই তুলে ধরার চেষ্টা করবেন তারা বলে জানানো হয়।

নিজেদের বাসস্থান ফ্রগমোর কটেজ সংস্কার করতে গিয়ে যে ২৪ লাখ পাউন্ড খরচ হয়েছে, তা মিটিয়ে দিতে চান হ্যারিরা। ব্রিটেনে এলে এরপর থেকে ফ্রগমোর কটেজেই থাকবেন তারা। আর তার জন্য ভাড়াও পরিশোধ করবেন। চলতি বছরের বসন্ত থেকেই এটি কার্যকর হবে।

হ্যারি আর মেগানের নতুন ওয়েবসাইট, সাসেক্স রয়্যাল ডটকমে লেখা হয়েছে, ডিউক ও ডাচেস অব কেমব্রিজের ভূমিকা ও কাজ সংক্রান্ত তথ্য ক্রমশ জানানো হবে। মেগান আপাতত কানাডায় থাকলেও খুব অল্প সময়ের জন্য যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারেন। কারণ রাজপরিবার সংক্রান্ত কিছু কাজ বাকি আছে তার।

প্রিন্স হ্যারিরও তেমন কিছু কাজ আছে। মার্চের শেষে তাদের কাজ শুরু হবে। তার আগে হ্যারি লন্ডনে আফ্রিকার নেতাদের সঙ্গে একটি সম্মেলনে যোগ দেবেন। তারপর ধীরে ধীরে রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়বেন। রয়্যাল মেরিনে ক্যাপ্টেন জেনারেলের পদও ছাড়বেন তিনি। পাশাপাশি সাম্মানিক এয়ার কমান্ডান্ট এবং আরও একটি পদ ছাড়বেন।

তাদের এই সরে যাওয়াকে কেউ কেউ ব্রেক্সিটের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর তাই মেগানের নামের সঙ্গে টেনে এটাকে বলা হচ্ছে, ‘মেক্সিট’। পদবি হারানোর কারণে কমনওয়েলথের দূতের ভূমিকাও আর পালন করবেন না তারা।

গত ৮ জানুয়ারি আকস্মিক রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন হ্যারি ও মেগান। একই সঙ্গে ভাগাভাগি করে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় সময় কাটানোর কথা জানান। হ্যারি–মেগান জানান, জনগণের অর্থের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আয় করে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে চান।

হুট করে হ্যারি–মেগানের নেওয়া ওই সিদ্ধান্তে বড় ধাক্কা খান রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গত সোমবার হ্যারির সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা। তাদের সিদ্ধান্তে সমর্থন দেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তারপর গতকাল শনিবার তাদের রাজকীয় পদবি বাতিলের কথা জানায় ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ।

এসএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।