চীনের রহস্যজনক ভাইরাসে এবার ভারতীয় আক্রান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

চীনে রহস্যময় এক ভাইরাসে আরও বেশিসংখ্যক মানুষের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার মধ্যে এবার এক ভারতীয় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে চীনে। এর বাইরে থাইল্যান্ড ও জাপানে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। সর্বশেষ ভারতীয় এক রোগীকে শনাক্ত করা হলো।

চীন দাবি করছে, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা নতুন এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৭শ। ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে অপর ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়ে নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।

চীন যদিও বলছে, ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষ নয়, প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়েছে। ইতোমধ্যে চীনের এই ভাইরাস নিয়ে বিমানবন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সিঙ্গাপুর, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্র। সিঙ্গাপুর ও হংকং চীনের উহান শহর থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে।

চীনের শেনঝেন প্রদেশে প্রথম বিদেশি হিসেবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী ভারতীয় এক শিক্ষিকা। গত শুক্রবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শেনঝেন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষিকা প্রীতি মাহেশ্বরী। তার আগে যে দুজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তারা উভয়ই উহান প্রদেশের বাসিন্দা।

চিকিৎসকরা বলছেন, প্রীতি মাহেশ্বরী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার চিকিৎসা চলছে। শিক্ষিকার স্বামী দিল্লির ব্যবসায়ী অশুমান খোয়াল জানান, শেনঝেনের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে তার স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। রোগীকে ভেন্টিলেটর ও লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এমন ভারতের জন্যও শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ উহান শহরে অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থী রয়েছেন। চীনা নববর্ষ উপলক্ষে ছুটির কারণে ভারতে ফিরছেন তারা। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আশঙ্কা, তাদের কারো দ্বারা যদি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যাবে।

রহস্যজনক ওই ভাইরাস নিয়ে প্রাথমিক ল্যাব পরীক্ষা শেষে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, ল্যাব পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ওই প্যাথোজেন সম্ভবত করোনা ভাইরাসের নতুন এক ধরন, যা এমন এক ধরনের ভাইরাস, কেউ যদি তাতে আক্রান্ত হয় তাহলে ঠান্ডাসহ শ্বাসযন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতির মতো প্রাণঘাতীর কারণ হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সতর্ক করে বলেছে, যেকোনো সময় এই ভাইরাস গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বৃহস্পতিবার উহান হেলথ কমিশন জানায়, রহস্যজনক এই ভাইরাসে অনেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ১২ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও পাঁচজন এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের অবস্থা বেশ গুরুতর।

উহান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামুদ্রিক খাবারের এক বাজার থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। গত ১ জানুয়ারি ওই বাজার বন্ধ করে দেয়া হয়। গত চীনা চান্দ্রবর্ষের আগে আগে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। মূলত দেশের জাতীয় ওই উৎসবে চীনের ১৪০ কোটি মানুষ তাদের নিজ শহর ছেড়ে অন্যত্র ঘুরতে যায়। তখনই এটা ছড়াতে পারে বলে ধারণা।

চীনের এক চিকিৎসক বলেন, এই ভাইরাস একজন থেকে অন্যজনে সংক্রমিত হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশেষ করে পরিবারের মধ্যে যারা একে অপরের সংস্পর্শে থাকে তাদের ক্ষেত্রে আশঙ্কা বেশি। নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনাথন বল বলেছেন, ব্যাপকহারে গবেষণা ছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্তের হার নির্ণয় করা কঠিন।

এসএ/এমকেএইচ

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।