মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক সংঘাতে পাকিস্তানের সর্বনাশ দেখছেন ইমরান খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৪৭ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য একটি সরাসরি সামরিক সংঘাতের ভার বইতে পারবে না। বিশেষ করে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে। এ ধরনের পরিস্থিতি পাকিস্তানের জন্য হবে ভয়াবহ সর্বনাশা।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে আঞ্চলিক দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে পাকিস্তানের নিরপেক্ষ অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ইমরান খান। এ দুই দেশের সঙ্গেই ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানের বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।

তিনি বলেছেন, উপসাগরীয় সৌদি আরব একদিকে যেমন পাকিস্তানের অন্যতম বন্ধু, অন্যদিকে ইরানের সঙ্গেও প্রতিনিয়ত সুসম্পর্ক রক্ষা করে পাকিস্তান। যে কারণে আঞ্চলিক এ দুই পরাশক্তির মাঝে উত্তেজনা বাড়লে পাকিস্তান কোনও পক্ষ নেবে না।

ইমরান খান বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘাত হলে সেটি পাকিস্তানের জন্য হবে সর্বনাশা। এ দুই দেশের সম্পর্ক যাতে খারাপ না হয়, আমরা সেটি নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্য আরেকটি সংঘাতের ভার বহন করতে পারবে না। ইমরান খান আঞ্চলিক উত্তেজনায় নিজ দেশের অবস্থান পরিষ্কার করে এমন এক সময় কথা বললেন; যার এক সপ্তাহ আগে সৌদি আরব, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের তিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কুরেশি।

ইমরান খান বলেন, শান্তির জন্য তার দেশ যে কোনও ধরনের ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত আছে। কিন্তু আর কখনই কোনও যুদ্ধের অংশ হবে না। মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের অন্যতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই সতর্কবার্তা এল।

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে গত ৩ জানুয়ারি ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশি সশস্ত্র শাখার প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নজিরবিহীন উত্তেজনা শুরু হয়।

তখন থেকে অনেকে আশঙ্কা করছেন, সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে সাময়িক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও ইরান এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বিশেষ করে সৌদি আরবে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে।

গত বছর পারস্য উপসাগরে তেলবাহী ইউরোপীয় জাহাজ ও ট্যাঙ্কার আটক এবং মার্কিন ড্রোনে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করে ইরান। এছাড়া গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আরামকোর একটি তেল স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি সৌদির এই তেলক্ষেত্রে হামলার দায় স্বীকার করলেও সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ আনে। এই হামলার পর বিশ্ব বাজারে তেলের সরবরাহ প্রায় ৫ শতাংশ কমে যায়।

অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকর নানা মুহূর্তে রিয়াদ এবং তেহরানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে পাকিস্তানকে। উভয় দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলেও এক পক্ষের দিকে ঝুঁকতে দেখা যায়নি পাকিস্তানকে। গত বছরও একইভাবে এ দুই দেশের মাঝে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিল পাকিস্তান। পরবর্তীতে ইরান পাকিস্তানের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর।

এসআইএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।