আমেরিকা ‘বেজার’ হলেও ইরানের সঙ্গে উৎসব আয়োজন ভারতের
তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের তুমুল উত্তেজনায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটাও যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বেজার’ করে দেয়ার কারণ মনে হচ্ছে অনেক দেশের কাছে। এই ঝুঁকি বুঝেও ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উৎসবের আয়োজন করতে চলেছে ভারত।
রাইসিনা সংলাপের শেষ দিন শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। জারিফ-জয়শঙ্কর বৈঠকের পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নয়াদিল্লির সংবাদমাধ্যম বলছে, যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভারত-ইরান সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে। কী কী কর্মসূচি নেয়া হবে তার তালিকা করা হচ্ছে এবং তা শিগগির চূড়ান্ত হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমারের দেয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, জাভেদ জারিফের সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দু’দেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়াবে। এছাড়া বৈঠকে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেছে উভয়পক্ষ। কথা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও।
জাভেদ জারিফকে জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রয়াসকে সমর্থন করবে ভারত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সংঘাতমূলক পরিস্থিতিতে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় করার প্রয়াস এবং তা প্রচার রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ। বাণিজ্যিক কারণে ভারত এখন সেই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটিই করে চলেছে। নয়াদিল্লির নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগ বজায় রাখার পাশাপাশি ইরানকেও পাশে রাখা তাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। কারণ ইরানের চাবাহার বন্দরকে ব্যবহার করেই ভারত এখন আফগানিস্তানসহ পশ্চিম এশিয়ার বৃহৎ বাজারে পা রাখতে শুরু করেছে। সেজন্য এই জায়গা থেকে পিছিয়ে আসা নয়াদিল্লির পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
তাছাড়া, ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনায় নতুন করে সৃষ্ট পরিস্থিতির আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মেনেই ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যে নিয়ে আসে ভারত। সে কারণে বেশ বেগও পেতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে। তাই ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে ভারত আর কোনো আপসে যাচ্ছে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
এইচএ/এমকেএইচ