আদমজীর ২৩৮ বিদেশি নাগরিকের নিরাপত্তা জোরদার


প্রকাশিত: ০২:২১ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৫

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে কর্মরত ২৩৮ বিদেশি নাগরিকের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকায় ইতালি ও রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিদেশি নাগরিকদের অনেকের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে- তাদের কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে রাখা হয়েছে।

আদমজী ইপিজেডে ২৩৮ জন বিদেশি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত, শ্রীলঙ্কা, হংকং, ফিলিপাইনসহ আরো কয়েকটি দেশের নাগরিক রয়েছেন। এসব বিদেশিদের অনেকেই ইপিজেডের ভেতরেই কারখানা ও পাশের বাসস্থানে বসবাস করেন।

আদমজী ইপিজেডের জিএম শাহ আলম সরকার বলেন, আদমজী ইপিজেডে বর্তমানে ২৩৮ জন বিদেশি কর্মরত আছেন। আর এসব বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তাছাড়া নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যাপারে আমি র্যাব-১১ এর পরিচালক, জেলা পুলিশ সুপার ও শিল্প পুলিশের এসপিদের সঙ্গে কথা বলেছি।

তিনি আরো বলেন, ইপিজেডের ভেতরে শিল্প পুলিশ-৪ এর কার্যালয় আছে। বাইরে র্যাব-১১ এর সদর দয়তর রয়েছে। এছাড়া ইপিজেডের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আগের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে।

শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিচালক (পুলিশ সুপার) সানা শামীমুর রহমান জানান, ইপিজেডে যেসব বিদেশি কর্মরত আছেন তাদের কারখানা ও থাকার এলাকাতে আগের চেয়ে বেশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জাকারিয়া জানান, বিদেশিদের নিরাপত্তার জন্য সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। এছাড়া টহল পুলিশের তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে বিদেশিদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ইপিজেড সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ বছরে বিদেশি ৩৫টি, দেশি ১৮টি ও যৌথ মালিকানাধীন আটটি শিল্প প্রতিষ্ঠান আদমজী ইপিজেডে বিনিয়োগ করেছে। যার মধ্যে হ্যাঙ্গার শিল্পে আরএফএল প্রতিষ্ঠানের ইরাম ডায়নামিক সলিউশান, গার্মেন্ট শিল্পে যুক্তরাজ্যের এএমসিএস টেক্সটাইলস লিমিটেড ও লন্ডন ফাস্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড, মরিশাসের অনন্ত অ্যাপারেলস লিমিটেড, জাপানের সিজে ফ্যাশনস লিমিটেড, ভারতের ডিএনভি ক্লোথিং লিমিটেড ও সিম্বা ফ্যাশনস লি., বিআর ভারজিন আইসল্যান্ডর কুনতং অ্যাপারেলস লি., কুয়েতের সউদ গার্মেন্টর ইন্ডাস্ট্রিজ লি., রোমানিয়ার ইউনিভার্সাল ম্যানসওয়্যার লি., হংকং ও চায়নার যৌথ মালিকানাধীন ইপিক গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং কোং লিমিটেড, এক্সিবিট ক্লোথিং লিমিটেড, কোন গার্মেন্টস অ্যান্ড এক্সেসরিজ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (বিডি) লিমিটেড ইউনিট-২, সুপ্রীম নিটওয়্যার লি. ইউনিট-১ ও ২, বাংলাদেশের ইউএইচএম লি. ও ইয়েস্টার জিন্স লি. বিনিয়োগ করেছে।

নিটিং অ্যান্ড অন্যান্য টেক্সাটাইল ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের অনন্ত হোক্সিং লিমিটেড, জার্মানির এফইএম ওয়েন্ডলার ইনটারলাইনিং লিমিটেড, কানাডার হাইল্যান সোয়েটার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, জাপানের মারুহিশা প্যাসিফিক কোং লি., চায়নার নিউটপ টেক্সটাইল বিডি লি., জাপানের সাইটোনেনসি বাংলাদেশ লি., পাকিস্তানের ইয়াসমা নিটিং অ্যান্ড ডাইং লি., বাংলাদেশের এনিগমা টেক লিমিটেড, মা কম্পোজিট লিমিটেড, রেমি হোল্ডিং লি. ও স্ক্যানডেক্স নিটওয়্যার লি.।

গার্মেন্ট এক্সেসরিজ এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আস্থা টেক লিমিটেড, বেকা গার্মেন্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড, ধলেশ্বরী লিমিটেড, ইউরো এ জিপার কোং (বিডি) লিমিটেড, হ্যামিলটন মেটাল করপোরেশন লিমিটেড, ইমেজ ইউনিট-১ ও ২, মাহিন ডিজাইন ইটিকেট (বিডি) লিমিটেড, মিখাইল প্লাসটোপ্যাক লি., শোর টু শোর টেক্সটাইল লি., নেদারল্যান্ডের চেকপয়েন্ট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড, স্পেনের ইরাম বাংলাদেশ লিমিটেড, কোরিয়া আরপির হ্যানজি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেড, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটকো গ্লোবাল প্যাকেজিং ঢাকা লি. ও আর-প্যাক বাংলাদেশ প্যাকেজিং কোং লি., বিআর ভার্জিন আইসল্যান্ডের রিবন অ্যান্ড বো ফ্যাক্টরি লিমিটেড, চায়নার এসএমএল প্যাকেজিং সল্যুশনস বাংলাদেশ লি., জাপানের ইয়োকাহামা লেবেলস অ্যান্ড প্রিন্টিং (বিডি) কোং লি., ভারতের টেক্স জিপারস (বিডি) লি., হংকং ও চায়নার যৌথ মালিকানাধীন ফ্রেঞ্চ ফ্যাশন নিটিং প্রাইভেট লিমিটেড, টিঅ্যান্ড এস বাটন (বাংলাদেশ) লি., ইয়েসটার এক্সেসরিজ কোম্পানি (বিডি) লি. বিনিয়োগ করেছে।

জুতো ও চামড়া সামগ্রীতে পর্তুগালের বেঙ্গল পেল্লি (বিডি) লিমিটেড, দক্ষিণ কোরিয়ার বুমেসি কোম্পানি লিমিটেড, মালয়েশিয়ার কিংকং লেদার ওয়্যার (বিডি) লিমিটেড, চীনের কোরিয়ান লেদার টেক কোম্পানি লিমিটেড, ইউক্রেনের সুপার প্রোটেকটিভ সুজ লি. বিনিয়োগ করেছে। পাওয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে মালয়েশিয়ার গ্যারিসান ইতিকা বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, ক্যামিকেল অ্যান্ড ফার্টিলাইজারে দক্ষিণ কোরিয়ার নিও বাংলা লি., ধাতব পদার্থে বাংলাদেশের সালেহা ওয়াইরস লি.সহ জার্মানির ক্যানকান ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, ভারতের ইনটারলেবেস রোবাস্ট বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড ও রেনেসা জুয়েলারি বাংলাদেশ প্রাইভেট লি., বাংলাদেশের সিগমা ইঞ্জিনিয়ারিং লি. বিনিয়োগ করেছে।

হোসেন চিশতী সিপলু/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।