ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ শুরু
ভারতে জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রাদেশকি মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা সাংবাদিকদের বলেছেন, রাজ্যের ৮০টি জেলার মধ্যে ২১টি জেলা থেকে তারা ৩২ হাজার জনকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে শনাক্ত করেছে।
ভারতে সম্প্রতি প্রণীত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুযায়ী, প্রতিবেশী মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া অমুসলিম সংখ্যালঘুদের দেশটির নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রয়েছে। আইনটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে দেয়া হিসাব অনুযায়ী, সম্প্রতি নাগরিকত্ব আইন বিরোধী ওই বিক্ষোভে শুধু উত্তর প্রদেশেই ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ভারতে ক্ষমতাসীন কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) অবশ্য বলছে, এই আইন মানুষকে নিপীড়নের হাত থেকে রক্ষা করবে।
কিন্তু আইনটির বিরোধী ও সমালোচকেরা বলছেন, দেশের ২০ কোটি সংখ্যালঘু মুসলমানকে তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্যই ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা’ কৌশলে ওই আইনটিতে এমন সংশোধন এনেছে। এটা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা। বিরোধীরা বলছেন, ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে নজর ফেরাতে মোদি সরকারের এই কূটকৌশল।
ভারতের উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতাসীন দল হচ্ছে বিজেপি। বিপুল সংখ্যক মুসলমানের ওই রাজ্যে বসবাস করে। সম্প্রতি আইনটির বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে অনেক মুসলমানই যোগ দিয়েছেন। এখন অভিযোগ উঠেছে, সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে এসব বিক্ষোভ দমন করছে।
বিক্ষোভে নিহতদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছে পুলিশের হাতে। এসব নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশের রাজ্যমন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা বলছেন, চলতি মাসের শুরু থেকে রাজ্যে সিএএ কার্যকর হয়েছে এবং এই আইনের আওতায় তারা অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে শুরু করেছে।
তিনি বলছেন, এই প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে, এখনও অনেক তথ্য আসছে। ভবিষ্যতে এ সম্পর্কে আরও জানা যাবে বলে তিনি জানান। তবে কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দল এই আইনের বিরোধিতা করে আসছে। এছাড়া প্রায় সাতটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন তাদের রাজ্যে তারা এই আইন প্রয়োগ করতে দেবেন না।
এসএ/পিআর