ইরানের হামলা কি দু’পক্ষকেই তুষ্ট করেছে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫১ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২০
মার্কিন বাহিনীর একপাক্ষিক হামলায় ইরানের ক্ষমতাধর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর তেহরান যে ‘চরম প্রতিশোধ’র হুমকি দিয়েছিল, সেটা বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভোরে দেখতে পেয়েছে বিশ্ববাসী। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে দুই দফায় হামলা চালিয়েছে ইরান।
এই হামলার কারণে ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যেমন সুযোগ খুঁজতে পারে, তেমনি খুঁজতে পারে সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথও।
বিশ্বের শীর্ষ সশস্ত্র বাহিনীর ঘাঁটিতে ইরানের এই হামলার প্রতীকী তাৎপর্য ব্যাপক। বুধবার ইরাকের সময় রাত দেড়টার দিকে ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি ছোড়া হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি অনেকটা এই সময়ই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একপাক্ষিক হামলা চালিয়ে জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। সেদিন সোলেইমানিকে মারার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও তার টুইটারে জাতীয় পতাকা পোস্ট করেছিলেন। বুধবার মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইরানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারাও তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে জাতীয় পতাকা পোস্ট করেন। ইরানের পক্ষ থেকে এই অপারেশনের নাম দেয়া হয় ‘শহীদ সোলেইমানি’।
ইরানের হামলার পর যেটা প্রতীয়মান হলো, যেন মার্কিন বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি ছোড়া হয়েছে। বিষয়টি ভাবার বড় কারণ হলো, যে ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে, সেখানে আগে থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রেখেছিল পেন্টাগন। আর সে কথা বেশ ভালোই জানা ছিল তেহরানের।
হামলার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাবেদ জারিফ বলেছেন, এই হামলা (সংকটের) শেষ টেনেছে এবং ইরানকে আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যে আত্ম-প্রতিরক্ষায় সক্ষম জাতি হিসেবে তুলে ধরেছে। এটা যুদ্ধ বাঁধানোর আক্রমণ নয়।
সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণের খবর শুনে ট্রাম্প যে টুইট করেন, সেখানেও যেন সংকটের ইতি টানার সুর ছিল। তার ‘সবকিছু ঠিক আছে! ইরাকে অবস্থিত দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের তথ্য মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যা হয়েছে, ভালো হয়েছে!...’ বলে মন্তব্য খুব বেশি উত্তেজক মনে হয়নি বিশেষজ্ঞদের কাছে।
তার এই পোস্টের পর ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই পর্যবেক্ষণ যদি সত্য হয়, তবে ইরানের বুধবারের এই হামলা দু’পক্ষের উত্তেজনা প্রশমিত করার বড় সুযোগ। ইরানও তার জনগণকে বলতে পারবে যে, তারা সোলেইমানি হত্যার সহিংস প্রতিশোধ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও পিছু হটে বলতে পারবে যে, তেহরান যে পদক্ষেপ (হামলা) নিয়েছে, তাতে তাদের কিছুই হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনায় এটিই এখন সবচেয়ে ভালো ব্যাপার। যদিও এ ‘ভালো ব্যাপার’ একটি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে। তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের অবস্থানস্থলে ডজনখানেকেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্রের হামলার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হোয়াইট হাউস একরোখা হয়ে যায় কি-না।
এইচএ/পিআর