মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে ইরাকের সংসদে প্রস্তাব পাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০২০

ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার চায় দেশটির পার্লামেন্ট। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব ইরাকের সংসদে পাস হয়েছে। এই প্রস্তাব পাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাবে ইরাক।

মার্কিন বিমান হামলায় শুক্রবার ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলেইমানি ও দেশটির শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হাশদ আল-শাবির উপ-প্রধান আবু মাহদি আল মুহানদিস নিহত হওয়ার দুদিন পর প্রস্তাবটি পাস হলো।

ইরাকের রাজনৈতিক নেতাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডাকেন চার মাসের বিক্ষোভের পর দেশটির বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল মাহদি। জরুরি ওই বৈঠকে পার্লামেন্ট সদস্যরা ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব দেয়ার পক্ষে মত দেন।

ইরাকের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‌‌‘ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকার আন্তর্জাতিক জোটের কাছে সহযোগিতা চেয়ে ইরাকে সেনা রাখার যে অনুরোধ করেছিল তা বাতিল করার প্রস্তাব করবে। কেননা ইরাকে সামরিক অভিযান শেষ হওয়ার সঙ্গে জয় (আইএসকে পরাজিত) অর্জিত হয়েছে।’

পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘সরকার অবশ্যই ইরাকের মাটিতে অন্য দেশের সেনা উপস্থিতির অবসান ঘটাতে কাজ করবে এবং যেকোনো কারণে এর ইরাকের ভূমি, আকাসসীমা অথবা জলপথ ব্যবহার করতে দেবে না।’

সংসদের আইন বিষয়ক কমিটির প্রধান আল শিবলি বলেন, ‘ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পরাজিত করার পর মার্কিন সেনাদের এখন আর প্রয়োজন নেই। দেশ রক্ষায় আমাদের সশস্ত্রবাহিনী আছে।’ প্রসঙ্গত, ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করার পর ইরাকের অনুরোধে তাদের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিতে মার্কিন সেনারা এখনও দেশটিতে রয়েছে।

এদিকে ইরাকের সংসদে বিলটি পাস হওয়ার আগে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইরাকের আন্তর্জাতিক আইএস-বিরোধী সামরিক জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোলেইমান কাসেমির হত্যার পর ইরাকের সামরিক ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশের সেনাদের সুরক্ষার কথা ভেবে তারা কার্যক্রম পরিচালনা আপাতত বাতিল করেছে।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে সামরিক অভিযান শুরু করার পর এখনো দেশটিতে আনুমানিক ৬ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। যাদের প্রাথমিক কাজ হলো ইরাকের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং ইসলামিক স্টেট বিরোধী অভিযান পরিচালনা। কিন্তু ইরাকে মার্কিন সেনাদের দীর্ঘদিনের এই উপস্থিতি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেয়া দেশটির প্রতিটি নাগরিকের দাবি বলে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা মন্তব্য করেছেন। নিরাপত্তা চুক্তি অনুযায়ী, পরামর্শমূলক কাজে জড়িত থাকার কথা থাকলেও খোদ ইরাকি বাহিনীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ আছে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ সোলেইমানি হত্যা এ ক্ষোভ উসকে দিয়েছে।

গত শুক্রবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের অঘোষিত সেনাপতি ও দেশটির ক্ষমতাধর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হন। তারপর থেকে চিরবৈরী ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা আরও চরমে। মধ্যপ্রাচ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিতও দিচ্ছেন অনেকে। সোলেইমানিকে হত্যার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে ফের হামলার হুমকি দিয়েছেন।

এসএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।