শনিবারের হামলা যুক্তরাষ্ট্র চালায়নি, দাবি মুখপাত্রের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪৭ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০২০
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের উত্তরের ক্যাম্প তাজি এলাকায় ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের (হাশদ আল-শাবি) ঘাঁটিতে শনিবার (৪ জানুয়ারি) যে বিমান হামলা হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্র চালায়নি বলে দাবি করেছেন পেন্টাগনের এক মুখপাত্র।
শনিবার ভোরের ওই হামলায় আল-শাবির এক শীর্ষ কমান্ডারসহ ছয়জন নিহত হলে কিছু সংবাদমাধ্যম জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী এই হামলা করেছে। ২৪ ঘণ্টা আগেই শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের অভিজাত শাখা কুদস্ বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।
তবে শনিবারের হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গঠিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিশেষ কমান্ড অপারেশন ইনহারেন্ট রিজল্ভের (ওআইআর) মুখপাত্র কর্নেল মাইলস বি ক্যাগিনস বলেন, ‘ইনহারেন্ট রিজল্ভ জোট সাম্প্রতিক দিনগুলোতে (বাগদাদের উত্তরে) ক্যাম্প তাজির কাছে কোনো বিমান হামলা করেনি।’
এর আগে সামরিক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শনিবার ভোরের ওই হামলায় আল-শাবির শীর্ষ কমান্ডারসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। আল-শাবির সদস্যদের বহনকারী তিনটি গাড়ির বহরে হামলা হলে দু’টি গাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে ছয়টি পোড়া মরদেহ দেখা যায়।
শুক্রবার ভোরে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একপাক্ষিক হামলায় ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ও তেহরান সমর্থিত গোষ্ঠী আল-শাবির উপ-প্রধান আবু মাহদি আল মুহান্দিস নিহত হন। সোলেইমানি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর সবচেয়ে আস্থাভাজন জেনারেল ছিলেন।
সোলেইমানি হত্যার পর তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দেয়। এমনকি আকাশে যুদ্ধবিমানও মোতায়েন করে ইরান। এই উত্তেজনার মধ্যেই হামলাটি হলো।
এক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভে টালমাটাল ইরাকে উত্তেজনা চলছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে। গত ২৭ ডিসেম্বর আল-শাবির শাখা কাতায়েব হিজবুল্লাহ’র রকেট হামলায় মার্কিন এক ঠিকাদার নিহত হন। তার দুদিন পর যুক্তরাষ্ট্র আল-শাবির ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ২৫ জনকে হত্যা করে।
এর প্রতিবাদে আল-শাবির সদস্যরা মিছিল নিয়ে রাজধানী বাগদাদের গ্রিন জোনে অবস্থিত মার্কিন দূতবাসে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে আরও ৭৫০ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয়। এরপর শুক্রবার ভোরে সোলেইমানি ও আল-শাবির উপ-প্রধানসহ আটজনকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইরানের সীমানার বাইরে গিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের ক্ষমতার বলয় তৈরির কারিগর ছিলেন মেজর জেনারেল সোলেইমানি। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলসহ তেহরানবিরোধী পক্ষের মাথাব্যথার কারণ ছিলেন সোলেইমানি। তাকে হারানোয় তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে ইরানে।
এইচএ/এমএস