বিশ্বজুড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর নানা রীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৮ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

বিশ্বের নানা প্রান্তে বিভিন্নভাবে নতুন বছরকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এক এক দেশে একেক ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে। কেউ কেউ ঘণ্টা বাজিয়ে, পূজা করে বছরের প্রথম দিনটি শুরু করে। আবার কোনো কোনো সংস্কৃতিতে চুমু খেয়ে, গান-বাজনা করে নতুন বছর শুরু করা হয়। তবে কিছু দেশে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী কিছু সংস্কৃতি রয়েছে, যা অন্যদের চেয়ে একেবারেই আলাদা। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ব্যতিক্রমী এসব রীতিনীতি নিয়েই আজকের এ আয়োজন।

গ্রিস

Ecuador.jpg

গ্রিসে ভিন্নভাবে নতুন বছর শুরু করা হয়। সেখানকার বাসিন্দারা নতুন বছরের শুরুতে নিজেদের বাড়ির দরজার সামনে পেঁয়াজ ঝুলিয়ে রাখেন। এটাকে তারা পুনর্জন্ম এবং আসন্ন বছরের উন্নতি বলে বিশ্বাস করেন।
সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে তারা নতুন বছরের শুরুর দিন তাদের বাড়িতে প্রবেশের আগে দরজার সামনে একটি ডালিম ভাঙে।

এস্তোনিয়া

Ecuador.jpg

এস্তোনিয়ার লোকজন নববর্ষের প্রাক্কালে সাত, নয় বা ১২ রকমের খাবার খান। তাদের বিশ্বাস, এতে অনেক বেশি শক্তি পাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমে নতুন বছরে অনেক বেশি বেশি খাবারের জোগান হবে বলে প্রত্যাশা করেন তারা।

বেলজিয়াম

Ecuador.jpg

বেলজিয়ামে নতুন বছরকে সিন্ট সিলভেস্তার ভোরানভন্ড অথবা সেইন্ট সিলভেস্তার ইভ বলা হয়। নতুন বছর উপলক্ষে ছোট শিশুরা ঈশ্বর এবং তাদের বাবা-মাকে শুভেচ্ছা জানাতে সুন্দর সুন্দর কাগজ কেনে।

স্পেন

Ecuador.jpg

স্পেনে নতুন বছর নিয়ে ধ্যান ধারণা একেবারেই আলাদা। স্পেনের লোকজন বিশ্বাস করে যে, বছরের শেষ দিনের মধ্যরাতে অর্থাৎ নতুন দিনের শুরুতে কেউ যদি ১২টি আঙুর খেতে পারে তবে এটা তার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে।

আর্জেন্টিনা

Ecuador.jpg

আর্জেন্টিনার লোকজন ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই সিমের বিচি বা এ জাতীয় শস্য খেয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। তাদের বিশ্বাস, এটা তাদের ক্যারিয়ারে সাফল্য এনে দেবে।

তাদের মধ্যে আরও একটি বিশ্বাস রয়েছে। তাদের বিশ্বাস, একটি স্যুটকেস হাতে পুরো বাড়ি ঘুরলে নতুন বছরে অনেক বেশি ঘোরাঘুরি করা যায়। কারণ তাদের এখানে গ্রীষ্মকালেই নতুন বছর শুরু হয়। এ সময়ই লোকজন বেশি বেশি বিচ, নদী এবং লেকের ধারে ঘুরতে যায়।

ইতালি

Ecuador.jpg

সৌভাগ্য, ভালোবাসা এবং প্রাচুর্য্য বৃদ্ধির জন্য নিউ ইয়ারের প্রাক্কালে ইতালিতে লাল রঙের অন্তর্বাস পরা হয়। তবে একেবারেই ব্যতিক্রম কাজ করে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। সেখানে অনেকেই জানালা দিয়ে সব পুরোনো জিনিস ফেলে দেয়। এভাবে পুরোনো সব ফেলে দেওয়াকে দুর্ভাগ্য এবং দুঃখ কাটিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানার প্রতীক বলে মনে করা হয়।

অপরদিকে ভেনিসে সেন্ট মার্ক স্কয়ারে গণচুমুর আয়োজন করা হয়। সেখানে হাজার হাজার মানুষ চুমু খেয়ে নতুন বছর শুরু করে।

ফিলিপাইন

Ecuador.jpg

ফিলিপাইনে নতুন বছরের প্রাক্কালে খাবারের টেবিলে ফল এবং নানা ধরনের খাবারের ১২টি ডিশ রাখা হয়। এগুলোর মাধ্যমে নতুন বছরে অর্থ এবং সমৃদ্ধি তুলে ধরা হয়। গোল আকৃতির সব কিছুকে তারা সমৃদ্ধির প্রতীক বলে মনে করে। মধ্যরাতে শিশুদের লাফ দিতে বলা হয় যেন তারা লম্বা হয়। যখন ঘড়িতে ১২টা বাজে তখন দরজা খুলে দেওয়া হয় যেন সৌভাগ্য প্রবেশ করতে পারে।

রোমানিয়া

Ecuador.jpg

রোমানিয়ায় ভালুক সেজে নেচে গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। লোকজন ভালুকের মুখোশ এবং পোশাক পরে রাস্তায় নাচ-গান করে। এছাড়া অন্যান্য প্রাণী যেমন- ছাগল এবং ঘোড়ার পোশাকও পরে অনেকেই।

জার্মানি

Ecuador.jpg

নতুন বছরের শুরুতে সিলভেস্তার হিসেবে স্মরণ করে জার্মানির লোকজন। ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ পোপ সিলভেস্তারের মৃত্যু হয়েছিল। তার প্রতি সম্মান জানিয়েই নতুন বছর শুরু করেন তারা। তারা বছরের শুরুতে ভালুক আকৃতির নানা রঙের চকোলেট বা এ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে লাল রঙকে ভালোবাসা এবং হলুদকে প্রাচুর্য্য বলে মনে করা হয়। জার্মানির লোকজন নতুন বছরের শুরুতে সবাই মিলে অনেক মজা করে এবং বিভিন্ন স্থানে আতশবাজি ফোটানো হয়।

ইকুয়েডর

Ecuador.jpg

নতুন বছর উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকৃতি তৈরি করে ইকুয়েডর। বিশেষ করে রাজনীতিবিদ এবং অন্যান্য বিশিষ্ট লোকজনের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়। এর মাধ্যমে তারা চলে যাওয়া বছরের দুর্ভাগ্যকে তুলে ধরে।

জাপান

Ecuador.jpg

জাপানে বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ১০৭ বার ঘণ্টা বাজানো হয়। রাত ১২টা বাজার পরপরই আরও একবার ঘণ্টা বাজিয়ে নিউ ইয়ারের দেবতা তোসিগামিকে স্বাগত জানানো হয়। এ উৎসব জয়া নো কানে নামে পরিচিত। এছাড়া নতুন বছরের সূর্যোদয় উপভোগ করেও দিন শুরু করেন অনেকেই। একে বলা হয় হাতসুহিনোদ।

বোলিভিয়া

Ecuador.jpg

বোলিভিয়ায় নতুন বছর উপলক্ষে যে কেক বানানো হয় তাতে অনেকগুলো কয়েন রাখা হয়। যে এই কয়েন খুঁজে পাবে নতুন বছর তার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে বলে মনে করা হয়। এছাড়া আরও একটি সংস্কৃতির প্রচলন রয়েছে সেখানে। অনেকেই এই দিনে হলুদ রঙের অন্তর্বাস পরেন। এটা তাদের নতুন বছরে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে বলে মনে করা হয়। তবে যারা ভালোবাসা খুঁজছেন তারা পরেন লাল রঙের অন্তর্বাস।

মেক্সিকো

Ecuador.jpg

জানালা দিয়ে এক বালতি পানি ছুড়ে ফেলে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় মেক্সিকানরা। নতুন বছরে ভালোবাসা, সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে নানা রঙের পোশাক পরা হয়। এছাড়া বাড়ির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে পুরো বাড়িতে ১২টি কয়েন রাখা হয়। এটাকে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করা হয়।

টিটিএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।