রিভিউ খারিজ, নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডে আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০৭ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

দিল্লির মেডিক্যাল শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ, নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির ফাঁসি কার্যকরের আরও কাছে এগিয়ে গেল। সর্বোচ্চ সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির মধ্যে সর্বশেষ একজনের সাজা বহাল রেখেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ওই অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করতে সুপ্রিম কোর্টে করা রিভিউ আবেদন বুধবার খারিজ হয়েছে।

২০১২ সালে দিল্লিতে একটি চলন্ত বাসে ওই মেডিক্যাল শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের পর গাড়ি থেকে ছুড়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা সেই সময় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়; যা পরবর্তীতে নির্ভয়া হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিতি পায়।

নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি অক্ষয় কুমার সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডের সাজা রিভিউয়ে বহাল রেখে আদালতের বিচারকরা বলেছেন, ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ ছিল এবং এটা করার জন্য তাকে এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছিল।

তিন বিচারের প্যানেল বলেছেন, রিভিউ পিটিশনের মানে আপিলের বিষয়ে বার বার শুনানি নয়। যা একইভাবে অনুস্মরণ করা হয়েছে এই মামলার অন্য তিন আসামির বিরুদ্ধে; তারাও মৃত্যুদণ্ডের সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছিল।

রিভিউয়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহালের ঘোষণার শোনার পর নির্ভয়ার মা আদালতের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি গত এক বছর ধরে এক পিলার থেকে আরেকটিতে দৌড়িয়েছি।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর দিল্লির একটি হলে সিনেমা দেখে বন্ধুর সঙ্গে বাসে করে ফিরছিলেন প্যারামেডিক্যালের ওই ছাত্রী। যাত্রী কম থাকায় বাসের চালক-সহকারী-সহ অন্তত ছয়জন মিলে নির্ভয়ার বন্ধুকে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে বাসের পেছনের দিকে ফেলে রাখে। মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। পরে দু'জনকে দিল্লির একটি সড়কের পাশে বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয়।

পরে আহত অবস্থায় দেশটির সরকার মেডিক্যাল এই শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠায়। সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৬ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। নির্ভয়ার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে দেশটির লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে দিনের পর দিন বিক্ষোভ করতে থাকেন।

নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা যান। এছাড়া দোষী সাব্যস্ত আরেক ধর্ষক কিশোর থাকায় আদালতের নির্দেশে তাকে তিন বছরের জন্য দেশটির কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

২০১৫ সালে সাজার মেয়াদ শেষে এই তরুণ মুক্তি পাওয়ার পর আবারও ভারতে তীব্র বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পরে দেশটির ধর্ষণের সাজার আইন পরিবর্তন করে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ হিসেবে বিবেচনা করার বিধান করা হয়।

২০১৩ সালে দেশটির দ্রুত বিচার আদালত বাকি চার ধর্ষকের সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করে। পরে দেশটির হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগও ওই সাজা বহাল রাখে।

সূত্র : এনডিটিভি।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।