লড়াইয়ে তোমরা একা নও, আমিও আছি : শিক্ষার্থীদের জামিয়া মিলিয়ার ভিসি
ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাজধানী নয়াদিল্লির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সময় পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপের ঘটনায় সারাদেশে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
দেশটির ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে বলছে, দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দেশের অন্যান্য শহর ও ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে। জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা একই কাতারে নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
জামিয়া মিলিয়া ক্যাম্পাসে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পুলিশ ঢুকে পড়ায় সোমবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার এই পিটিশনের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকে পড়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমা আক্তার। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
সোমবার এক ভিডিও বার্তায় শিক্ষার্থীদের পূর্ণ আশ্বাস দিয়ে জামিয়া মিলিয়ার এই উপাচার্য বলেছেন, আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে, তাতে আমি মর্মাহত। অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে পুলিশের ঢুকে পড়া গ্রহণযোগ্য নয়।
‘আমি আমার শিক্ষার্থীদের বলতে চাই, এই লড়াইয়ে তোমরা একা নও। আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।’
পরে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য নাজমা আক্তার বলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশের ঢুকে পড়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এফআইআর দায়ের করবে। তিনি বলেন, আপনি সম্পত্তি পুনর্নির্মাণ করতে পারবেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে পারবেন না। আমরা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করছি।
রোববার নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বেধড়ক লাঠিপেটার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে দেশটির শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা জামিয়া মিলিয়া ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে কমপক্ষে ১০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। একই ধরনের সংঘর্ষ হয়েছে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।
পুলিশি নিমর্মতা ও শিক্ষার্থী আটকের ঘটনায় সোমবার নয়াদিল্লিতে পুলিশের সদর দফতরের সামনে শত শত মানুষ জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, তারা সংযত থেকে দায়িত্ব পালন করেছে।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে
এসআইএস/জেআইএম