মোদি-অমিতের মুসলিমবিরোধী বিল রাজ্যসভাতেও পাস
লোকসভার পর ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হলো বিজেপি সরকারের উত্থাপিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিএবি। ধর্মীয় বিবেচনায় তৈরি বিলটি নিয়ে বিতর্কের পর ২৪০ সদস্যবিশিষ্ট রাজ্যসভায় এর পক্ষে ১২৫ এবং বিপক্ষে ১০৫ আইনপ্রণেতা সমর্থন দেন। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই বিলটি এখন আইনে পরিণত হবে।
বিজেপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্থাপিত বিলটির পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটির আগে তা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হবে কি না, এ নিয়েও ভোটাভুটি হয়। বিরোধী দলের সাংসদরা মোট ১৪টি সংশোধনীর প্রস্তাব করেন। কিন্তু ভোটাভুটিতে বিরোধীদের তোলা সব সংশোধনী প্রস্তাব খারিজ হয়।
ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার বিতর্ক এবং বিরোধীদের প্রবল আপত্তির পর গত সোমবার মধ্যরাতে বিলটি পাস হয়। তারপর আজ বুধবার বিলটি নিয়ে রাজ্যসভাতেও জোরালো প্রতিবাদ করে বিরোধীরা। বিশেষ করে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মীয় বিবেচনায় নাগরিকত্ব প্রদানের এই বিল নিয়ে বিজেপির সমালোচনা করে।
তবে রাজ্যসভায় বিলের পক্ষে যুক্তি হিসেবে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ বলেন, ‘এসব লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে ধর্মীয়ভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে সেসব শরণার্থীদের অধিকার দেয়া হবে।’ প্রসঙ্গত দুই কক্ষে পাস হওয়ার এ বিলের মাধ্যমে উল্লিখিত তিন দেশ থেকে ভারতে যাওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।
ধর্মীয় বিবেচনায় দেশের একটি সম্প্রদায়কে (মুসলিম) বিতাড়িত করতে এমন বিলের বিরোধিতায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল সব রাজ্যের দলীয় সভাপতিদের নিজ নিজ রাজ্যে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকসভায় গত সোমবার অনায়াসে বিলটি পাস করাতে সমর্থ হয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার। অমিত শাহ সেদিন নাগরিকত্ব বিলটি উত্থাপন করলে এর পক্ষে ভোট ৩১১ এবং বিপক্ষে ভোট দেন ৮০ জন আইনপ্রণেতা। বিলটি পাসের মোদি দিনটিকে ভারতের জন্য মাইলফলক বলে অবিহিত করেছেন।
ভারতে ক্ষমতাসীন কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি এই বিলের মাধ্যমে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনুপ্রবেশকারী, যারা সেসব দেশে ‘ধর্মীয় নিপীড়নের’ শিকার হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান করা হয়েছে।
এদিকে বিলটি নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে। তিন রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ বিলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। দোকানপাট ভাঙচু করেছে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস আর ফাঁকা গুলিও ছুঁড়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে বিজেপি সভাপতি ও মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন যে, প্রস্তাবিত আইন থেকে উত্তর-পূর্বের অনেকটা অংশই বাদ দেয়া হবে। কিন্তু উত্তরপূর্ব ভারতের বিক্ষোভকারীদের দাবি, এর ফলে এসব এলাকায় প্রচুর অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়বে।
A landmark day for India and our nation’s ethos of compassion and brotherhood!
— Narendra Modi (@narendramodi) December 11, 2019
Glad that the #CAB2019 has been passed in the #RajyaSabha. Gratitude to all the MPs who voted in favour of the Bill.
This Bill will alleviate the suffering of many who faced persecution for years.
এসএ/বিএ