উত্তরপূর্ব ভারতে ‘জাতিগত নিধনের’ চেষ্টা করছে সরকার : রাহুল গান্ধী
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মাধ্যমে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে জাতিগত নিধনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহু গান্ধী। তিনি বলেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ফৌজদারী আক্রমণ’ এবং ওই অঞ্চলে সরকারের জাতিগত নিধনের একটি প্রচেষ্টা।
লোকসভায় অনুমোদন পাওয়ার দু’দিন পর বুধবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ব্যাপক বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল উপস্থাপন করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
রাজ্যসভায় বিলটি নিয়ে বিতর্ক শুরুর আগে টুইটারে দেয়া এক টুইট বার্তায় রাহুল গান্ধী বলেন, উত্তর-পূর্বে জাতিগত নিধন চালাতে মোদি-শাহ সরকারের একটি চেষ্টা হলো এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)। উত্তর-পূর্বের মানুষের জীবনযাত্রা এবং ভারতের ধারণার ওপর এটা এক ধরনের ফৌজদারী আক্রমণ। আমি উত্তরপূর্বের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সংহতি জানাই এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবো।
এর আগে গত সোমবার ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়। বিলটি নিয়ে দেশে এবং বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়লেও নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার বিলটি রাজ্যসভায় পাসের পর দ্রুত আইনে পরিণত করতে চায়। যদিও এই বিল নিয়ে ইতোমধ্যে আপত্তি জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কমিশন।
এই বিলে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন। তাহলে স্বাভাবিক উপায়ে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য তাদের মাত্র ছয় বছর ভারতে বসবাসের কিংবা কাজের প্রমাণ দেখাতে হবে। কিন্তু বিলটিতে মুসলিমদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
বিলটি লোকসভায় পাস হয়ে যাওয়ার পর দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ থেকে পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে আসাম ও ত্রিপুরায়। ত্রিপুরা রাজ্য সরকার বিক্ষোভের কারণে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য রাজ্যে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
উত্তেজিত জনতা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করায় ত্রিপুরার সেপাহিজালা এলাকায় এক শিশুকে হাসপাতালে ঠিক সময়ে নিতে পারেনি পরিবার। ফলে পথেই মারা গেছে শিশুটি। উত্তরপূর্বাঞ্চলের মানুষের জাতিগত পরিচয় কেড়ে নিতেই নরেন্দ্র মোদি সরকার বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এনেছে বলে অভিযোগ করেছে এই অঞ্চলের প্রভাবশালী একটি ছাত্র সংগঠন।
The CAB is a attempt by Modi-Shah Govt to ethnically cleanse the North East. It is a criminal attack on the North East, their way of life and the idea of India.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) December 11, 2019
I stand in solidarity with the people of the North East and am at their service.https://t.co/XLDNAOzRuZ
সূত্র : এনডিটিভি, বিবিসি।
এসআইএস/জেআইএম