চীনে উইঘুর মুসলিম নির্যাতন, মার্কিন কংগ্রেসে বিল পাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯

চীনে উইঘুর মুসলিমদের নির্বিচারে আটক, নির্যাতন এবং হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে একটি বিল পাস হয়েছে। মূলত চীন নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ নিল দেশটির আইনপ্রণেতারা।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্বায়ত্তশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি চেন কুয়াংগুও’র নাম উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিলে। তবে বিলটি আইনে পরিণত করতে হলে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুমোদন লাগবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে চীন বলেছে, এটা তাদের দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থুল হস্তক্ষেপ। প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া ওই বিলটির নাম ‘দ্য উইঘুর হিউম্যান রাইটস পলিসি অ্যাক্ট-২০১৯, যা গতকাল মঙ্গলবার রাতে ৪০৭ বনাম ১ ভোটে কংগ্রেসে পাস হয়।

মার্কিন কংগ্রেসে এই বিলটি পাস হওয়ার কয়েকদিন আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে পাস হওয়া একটি বিলে স্বাক্ষর করে তা আইনে পরিণত করেন। বেইজিং ওই আইন তৈরির সময়ও তাদের ব্যাপক ক্ষোভের কথা জানিয়ে এর নিন্দা করেছিল।

কেন্টানি অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলীয় কংগ্রেসম্যান থমাস মেসিয়ে উইঘুর বিলের বিপক্ষে ভোট দেন। তিনি এর আগে হংকং সক্রান্ত বিলের বিরুদ্ধেও ভোট দিয়েছিলেন। সর্বজনীন মানবাধিকার মানদণ্ড লঙ্ঘনের অভিযোগসহ ১০ লাখের বেশি সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমকে সুরক্ষার উদ্দেশ্যে এই বিল পাস করা হয়েছে।

বিলে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে তারা পদ্ধতিগতভাবে বৈষম্যের মাধ্যমে উইঘুর মুসলিমদের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার অস্বীকার করছে। এরমধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশ, ধর্ম পালনের স্বাধীনতা, আন্দোলন ও সুষ্ঠু বিচারের বিষয়টি। জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের নির্যাতনে কিরকম নীতি নেয়া হয়েছে তারও উল্লেখ রয়েছে বিলটিতে।

বিবিসির চীন প্রতিনিধি জন সুডুর্থ বলেছেন, যদি এই বিলটি আইনে পরিণত হয় তাহলে তা হবে উইঘুরসহ দেশটির অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীন যে গণহারে আটকসহ নানাভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপ তৈরির সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে উইঘুর বিল পাস নিয়ে বলেছে, ‘এই বিলের মাধ্যমে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ইচ্ছাকৃতভাবে জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিকে তুলে ধরছে। চীনের সন্ত্রাসবাদবিরোধী এবং মৌলবাদ নিশ্চিহ্নকরণের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে এই বিল একটি অপবাদ এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ।’
চীন সরকার বলছে, তারা সহিংস ধর্মীয় চরমপন্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উইঘুরদের ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ পুনঃশিক্ষা প্রদান করছে। কিন্তু প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, শুধু নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই অনেককে আটক করে রাখা হয়েছে। উদাহরণস্বরুপ পর্দা মেনে চলা ও নামাজ আদায়ের মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

এসএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।