নীলফামারীতে ৩১ লাখ টাকা নিয়ে উধাও এনজিও
একটি ভুয়া এনজিওর ফাঁদে পড়ে প্রায় দুই হাজার নারী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, রাতের আধারে দাদন গণবিদ্যা ও বহুমুখী ফাউন্ডেশন নামের এই ভুয়া এনজিওটি এলাকার সহজ সরল মানুষজনকে ঋণ ও চাকরি দেয়ার নামে ৩১ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, এলাকার চিলাহাটি বাজার সংলগ্ন বাদল মিয়ার বাড়িতে তিন মাস আগে ভাড়া নেয় দাদন গণবিদ্যা ও বহুমুখী ফাউন্ডেশন। তারা ডোমার উপজেলার দশটি ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের শুধুমাত্র দুই হাজার নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেন।
এ জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ বাবদ এক হাজার ৩শত টাকা হারে আদায়সহ সহজ কিস্তিতে সেলাই মেশিন প্রদান করার আশ্বাস দিয়ে উক্ত ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এসকে আলম দুই হাজার নারীর কাছ থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকা ও একই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়োগকৃত ১০জন সেলাই প্রশিক্ষকের ভাল বেতনের চাকরির নামে জামানত হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে ৫ লাখসহ ৩১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ওই এনজিওটির ভাড়া অফিসে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের দেখতে না পেয়ে ওই সব নারীরা প্রতিদিন ধরনা দিয়ে ফিরে যেতে থাকেন।
এ অবস্থায় বাড়ির মালিক বাদল মিয়া সোমবার রাতের আধারে ওই এনজিওর সাইনবোর্ড নামিয়ে নেয়। মঙ্গলবার বিভিন্ন এলাকার নারীরা এসে এনজিওর সাইনবোর্ড দেখতে না পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপর আর খুঁজে পাওয়া যায় না বাড়ির মালিক বাদল মিয়াকে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, এই এনজিওটির প্রধান কর্মকর্তা এসকে আলমের গ্রামের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার দাদনগ্রামে। বর্তমানে তিনি রংপুর শহরের গুরাতিপাড়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। ৩১ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
সেলাই মেশিনের প্রশিক্ষক হিসেবে এলাকার হারুন মিয়া জানান, এই প্রতিষ্ঠান বন্ধের আগে আমাদের মোবাইলের সিম পরিবর্তনের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন এনজিওর প্রধান কর্মকর্তা এসকে আলম। তখন আমরা বুঝতে পারিনি যে এই প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া। আমরা জামানতের টাকা দিয়ে তিন মাস চাকরি করার পরেও বেতন পাইনি।
প্রতারণার শিকার হওয়া নারীদের মধ্যে নাসিমা বেগম বলেন, আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ বিচার চাই।
জাহেদুল ইসলাম/এসএস/আরআইপি