মুসলিম নির্যাতন নিয়ে মন্তব্যে অ্যাকাউন্ট বন্ধ, ক্ষমা চাইল টিকটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

ফিরোজা আজিজ, বয়স ১৭। উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনের নির্যাতনের সমালোচনা করে ভিডিও বানানো ও শেয়ারের প্ল্যাটফর্ম টিকটকে পোস্ট করেছিলেন তিনি। পরে ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি পোস্ট করার পর যুক্তরাষ্ট্রের এই কিশোরীর টিকটক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়া হয়। কিন্তু সমালোচনার মুখে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে অ্যাকাউন্টটি ফিরিয়ে দিয়েছে টিকটক কর্তৃপক্ষ।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) প্রায় এক ঘণ্টার জন্যে ভিডিওটি সরিয়ে নেয়া হয়। এরই মধ্যে সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এটি ৯০ লাখের বেশি বার দেখা হয়ে গিয়েছিল।

ওই কিশোরীর পোস্ট করা ভিডিওটিতে দেখা যায়, কীভাবে মেকাপ করতে হবে তার বর্ণনা দেয়ার এক ফাঁকে চীনে উইঘুর মুসলিমদের যেভাবে বন্দী রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে তারও নিন্দা করছেন। সেখানে কী হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজও নিতে বলছেন তিনি। একে ‘আরও একটি হলোকাস্ট’ বলেও উল্লেখ করেন ফিরোজা আজিজ।

চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশালায় আটকে রেখে তাদের মগজ ধোলাই করছে দেশটির সরকার। কিন্তু বেইজিং বলছে, এগুলো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের লক্ষ্যেই তারা এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। তাদেরকে আটকে রেখে কীভাবে তাদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে সম্প্রতি তার কিছু দলিলপত্র ফাঁস হয়েছে।

Firoza-2

ফিরোজা আজিজের ভিডিওটি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে টিকটক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কারণ এই সামাজিক মাধ্যমটির মালিক বেইজিংভিত্তিক একটি কোম্পানি বাইটড্যান্সের।

টিকটক কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদেরই মানবিক ভুলের কারণে এরকমটা হয়েছে। ভিডিওটিতে এমন কিছু নেই যা তাদের নীতিমালা ভঙ্গ করেছে। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে তাদের কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে তারা চীনা নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুসরণ করে না বলেও জানায় তারা।

টিকটক আরও বলছে, চীনের বিষয়ে মন্তব্য করার কারণে ফিরোজা আজিজকে শাস্তি দেয়া হয়নি। বরং এর আগে তিনি আরেকটি অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। ওই ভিডিওতে ওসামা বিন লাদেনের ছবি ছিল। সে কারণেই তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের নিরাপত্তাজনিত প্রধান এরিক হ্যান বলেন, ওসামা বিন লাদেনের একটি ভিডিও পোস্ট করার কারণে চলতি মাসে ফিরোজা আজিজকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি টিকটকের এই ব্যাখ্যা মেনে নিতে পারেননি। টুইটারে ফিরোজা বলেন, ‘এই কথা কি আমি বিশ্বাস করব?’

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিরোজা আজিজ বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি টুইটারে, ইন্সটাগ্রামে, যেসব সামাজিক মাধ্যমে আমার অ্যাকাউন্ট আছে সেগুলোতেও কথা বলবো, এমনকি টিকটকেও। টিকটকের ভয়ে আমি মোটেও ভীত নই।’

সূত্র : বিবিসি বাংলা

এমএসএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।