উদ্বাস্তুদের তিন একর পর্যন্ত জমি দেবে মমতা সরকার
উদ্বাস্তুদের তিন একর পর্যন্ত জমির মালিকানা সত্ত্ব দেয়ার ঘোষণা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্ন থেকে রাজ্য সরকারের পক্ষে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন তিনি। কলকাতার দৈনিকগুলোতে এই খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গতকাল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভা এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থার ৯৭৩ একর এবং বেসরকারি সংস্থার ১১৯ একর জমিতে উদ্বাস্তুদের মালিকানা সত্ত্ব দেয়া হবে। ফলে প্রায় ১১ হাজার ৯৮৬টি পরিবারের মোট ৫৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।
সোমবার মন্ত্রিসভায় গৃহীত এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার জমিতে দীর্ঘদিন ধরে যেসব উদ্বাস্তুরা বসবাস করছেন তাদের তিন একর পর্যন্ত জমির সত্ত্ব প্রদান করা হবে। মূলত এসব উদ্বাস্তু হলেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশটিতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশি নাগরিক।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘কেউ যদি ১২ বছর একটা জায়গায় বসবাস করেন তাহলে সেই জায়গার ওপর বসবাসকারীর একটা অধিকার জন্মায়। আর গত প্রায় ৫০ বছর ধরে উদ্বাস্তুরা এই রাজ্যে বসবাস করছেন। ভোটাধিকার বা অন্য সুযোগ-সুবিধা পেলেও এতদিন জমির অধিকার তারা পাননি।’
মমতা জানান, ‘১৯৭১ সালের মার্চ থেকে নিজের জমি কিংবা বাড়িঘর কোনো কিছুই নেই তাদের। আমরা অনেকবার কেন্দ্র সরকারকে এই সমস্যা সমাধানের কথা জানালেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। পাল্টা সেসব জমি থেকে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদের জন্য মাঝেমধ্যেই নোটিশ পাঠায়।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় উদ্বাস্তুদেরও অধিকার আছে। তাই তারা যেখানে বসবাস করছেন সেই জমির সত্ত্বাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তিন একর পর্যন্ত জমিতে এই সত্ত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদি কারও কাছে এর চেয়েও বেশি জমি থাকে তাহলে সরকারিভাবে সমীক্ষা করার পর ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তবে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেও বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে গিয়ে নানারকম সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে ধারণা আইন বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, এভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থার জমি অন্যের হাতে তুলে দেয়ার বিষয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল।
এসএ/এমকেএইচ