সকালে শুরু বিকেলে বিলীন!
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ডাউয়াবাড়ী গ্রামে হঠাৎ ভাঙনের খেলায় মেতেছে সর্বনাশা তিস্তা। একে একে বসত ভিটা তিস্তা গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এরপর উপজেলার ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সকালে ভাঙন শুরু হয়ে বিকেল গড়তেই নদীতে বিলীন হয়ে গেল!
সোমবার বিকেলে ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভেঙে নদীগর্ভে মিশে গেছে। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও বিকেল হতে না হতে ক্রমশ নদীতে হেলে পড়ছে।
এলাকাবাসী জানান, গত দুদিন ধরে তিস্তার প্রবল স্রোতের তোড়ে উপজেলার ডাউয়াবাড়ি গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। এতে দুই দিনে ৫০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ঈদের পরদিন থেকে হঠাৎই নদী ভাঙনের কবলে পড়েছেন তারা।
ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েও তাদের পক্ষ থেকে কোনাে সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই অবস্থায় তিস্তার ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো সম্বল হারিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অসহায় মানুষগুলো।
তাদের মধ্যে ডাউয়াবাড়ি গ্রামে মোরশেদা বেওয়া (৪০), মারুফ মিয়া (৩৫), আবু বক্কার (৩৫), আসাদুজ্জামান (৩০), এনামুল হক (৪০), আবিয়া বেওয়া (৩৫), শামসুল (৪৫), সফিয়ার (২৮), শিমুল (৩২), কালাম (৩৪), এর ঘর-বাড়ি তিস্তার ভাঙনের বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে ঈদের ছুটি শেষে মঙ্গলবার প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও পাঠদান নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বাবলা জাগো নিউজকে জানান, হঠাৎ ভাঙনে এসব পরিবার তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে উত্তর ডাউয়াবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ও অপর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও ধীর ধীরে নদীতে ভেঙে পড়ছে বলে জানান ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। শীঘ্রই টিনশেডের ঘর তৈরি করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান আতিকুর রহমান জানো নিউজকে বলেন, সোমবার তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। যেহেতু, স্কুলের ভবন নদীতে মিশে গেছে, সেহেতু বিকল্প ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে শিক্ষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রবিউল হাসান/এমজেড/এমএস