রোহিঙ্গা নিধনে গাম্বিয়ার মামলায় ‘খুশি’ মিয়ানমার!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলাকে মিয়ানমারের ‘উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় স্বার্থ’ হিসেবে বিবেচনা করছে নেইপিদো। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিধনযজ্ঞ চালিয়ে গণহত্যা প্রতিরোধ ও অপরাধের শাস্তির বিধান সম্পর্কিত ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ কনভেনশনের বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ওই মামলা দায়ের করেছে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, এই মামলায় মিয়ানমারের উচ্চ জাতীয় স্বার্থ রয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচির কার্যালয়ের মন্ত্রী ইউ কিয়াও টিন্ট সোয়ে ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী ইউ কিয়াও তিন শনিবার নেইপিদোতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা সিনহুয়া বলছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলা মোকাবেলার জন্য মিয়ানমারের শীর্ষ আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই মামলায় লড়াইয়ের জন্য ইতোমধ্যে একটি শক্তিশালী আইনজীবী টিম গঠন করা হয়েছে।

আইসিজেতে এই মামলায় মিয়ানমারের পক্ষে অ্যাজেন্ট হিসেবে লড়বেন দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। ওই দুই মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মামলার সব বিষয়ে মিয়ানমারে পক্ষে লড়বেন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। এছাড়া সু চির বিকল্প অ্যাজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে মন্ত্রী ইউ কিয়াও টিন্ট সোয়েকে।

গত বৃহস্পতিবার দেশটির সরকার নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অং সান সু চি মিয়ানমারের আইনজীবী দলের নেতৃত্ব দেবেন বলে ঘোষণা দেয়। গাম্বিয়ার এই মামলায় ও দেশের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় তিনি মিয়ানমারের পক্ষে আইনি লড়াই চালাবেন বলে জানানো হয়।

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার পক্ষে গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

রাখাইনে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। এর আগে, ২৩ আগস্ট রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াইরত রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এতে ৩০ জনের বেশি সীমান্তরক্ষীর প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার জেরে রাখাইনের রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সহিংস সামরিক অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও জ্বালাও পোড়াওয়ের অভিযোগ এনে জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জাতিগত নিধন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে।

তবে মিয়ানমার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলছে, সশস্ত্র বিদ্রোহীদের দমনের অংশ হিসেবে সামরিক বাহিনী অভিযান পরিচালনা করেছে।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।