ইরানে চলমান বিক্ষোভে নিহত ১২
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানের চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। গত চারদিনের এই বিক্ষোভে সরকারের দেয়া হিসাবের চেয়ে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে সূত্রের বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তাই দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ইরান সরকার। তবুও দেশটির রাজধানী তেহরানসহ বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভ চলছেই। তবে গতকাল সোমবার ইরান সরকারের মুখপাত্র দাবি করেন যে, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে গোটা দেশের পরিস্থিতি এখন শান্ত।
বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে দমনে নানা পন্থা অবলম্বর ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইরান সরকারের সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিসহ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে কূটচাল চালছে শত্রুপক্ষরা।
ইরানের এলিট ফোর্স আইআরজিসি বিক্ষোভ অবসানের আহ্বান জানিয়েছে। আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, দেশে ও দেশের বাইরে ইরানের যেসব শত্রু ও বিরোধী রয়েছে তারাই চক্রান্ত করে এই অন্তর্ঘাতমূলক বিক্ষোভে উসকানি দিচ্ছেন। তিনি সরকারি সিদ্ধান্তের পক্ষে নিজের সমর্থনের কথাও জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভকারীদের সমর্থনের ঘোষণা দেয়ার পর ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে তার সমালোচনা করেছেন। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বিক্ষোভ দমনে ইরান সরকারের সমালোচনা করে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের সঙ্গে আছে।’
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যকে ভন্ডামি অভিহিত করে বলেছেন, ‘গত বছর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ইরানের অর্থনীতিসহ সাধারণ নাগরিক নানা রকম সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। আর এখন তারা পাশে আছি বলে ভন্ডামি করছেন।’
শুক্রবার ইরান সরকার প্রতি লিটার পেট্রলের মূল্য ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার রিয়াল করার ঘোষণা দিলে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, মাসে প্রতিটি ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য ৬০ লিটার জ্বালানি বরাদ্দের কথা জানিয়ে নির্ধারিত পরিমাণের বাইরে পেট্রল কিনতে চাইলে প্রত্যেক লিটারের মূল্য ৩০ হাজার রিয়াল করা হয়।
এসএ/এমএস