দোকানে গিয়ে ওষুধ নিল আহত হনুমান
শনিবার সকালে দুই হনুমান মিলে মারামারি করছিল। তাদের দেখতে ভিড় জমেছিল। কে কাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলতে পারে তার জন্যই তুমুল মারামারি হচ্ছিল হনুমান দুটির মধ্যে।
তাদের মারামারি দেখে অনেকে হাততালিও দিতে থাকেন। মারামারিতে আহতও হয় তারা। কিছুক্ষণ পর রণে ভঙ্গ দিয়ে একটি হনুমান পালিয়ে যায়। অন্যটি বসে থাকে চুপ করে। বেশ কয়েক জায়গায় ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে।
সকালে মল্লারপুর স্টেশন চত্ত্বরে যাত্রীদের নিয়ে টোটোর যাওয়া আসা চলতেই থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আচমকা একটি টোটোয় চড়ে বসে আহত হনুমানটি। করুণ চোখে সহযাত্রীদের গায়ে হাত রেখে বোঝানোর চেষ্টা করে সে আক্রমণ করবে না।
মল্লারপুর স্টেশন থেকে কিছু দূরে পঞ্চায়েত ভবন। সেখানেই একটি ওষুধের দোকানের সামনে হুট করেই নেমে পড়ে হনুমানটি। ওষুধ দোকানের মালিক আনাজুল আজিম বলেন, দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছিল হনুমানটি। দোকানের ভিড় একটু কমতেই লাফ দিয়ে কাউন্টারে উঠে বসে কোমরের নীচে ও শরীরের অন্য অংশে ক্ষতস্থানগুলো দেখাতে থাকে। আমার হাত ধরে এমন ভাব করে যেন চিকিৎসা চাইছে।
দোকানে ওষুধ নিতে এসেছিলেন শক্তিপদ মিস্ত্রি নামে স্থানীয় এক যুবক। তিনিও হাত লাগান জখম হনুমানের ক্ষতে মলম ও ব্যান্ডেজ করায়। ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার পরেও ক্ষতস্থানগুলি বারবার দেখাতে থাকায় ওই ওষুধ দোকানদারের মনে হয় ব্যথার জন্য হনুমানটি এরকম করছে। কাপে পানি নিয়ে একটি ব্যথা কমার ওষুধও খাওয়ানো হয় তাকে। সঙ্গে কয়েকটি কলাও খেতে দেয়া হয়। কিছুক্ষণ বসে থেকে দোকানের কাউন্টার থেকে রাস্তায় নেমে ফের একটি স্টেশনগামী টোটোয় চড়ে বসে সে।
বন্যপ্রাণী গবেষক শান্তিনিকেতনের ঈশানচন্দ্র মিশ্র বলেন, যেসব প্রাণী মানুষের কাছাকাছি থাকে তাদের কেউ কেউ মানুষের আচরণ, কার্যকলাপ অনুকরণ করে। সে কারণেই হনুমান, বানর বা কুকুরের অনুকরণের ক্ষমতা অনেক বেশি।
টিটিএন/জেআইএম