মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ডেও বিপাকে বিজেপি
মহারাষ্ট্রে দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী শিবসেনার সঙ্গে সরকার গঠন করতে না পেরে সেখানে আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার সুপারিশ করেছে মোদির মন্ত্রিসভা। এবার ঝাড়খণ্ডেও নির্বাচন নিয়ে বিপাকে পড়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। আগামী ৩০ নভেম্বর রাজ্যটিতে নির্বাচন।
ঝাড়খণ্ডে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জোটসঙ্গী আজসু পার্টি এবং লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) বিজেপির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিরাগ পেশওয়ানের এলজেপি ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যটিতে মাত্র একটি আসনেই প্রার্থী দিয়ে তাতে পরাজিত হয়েছিল।
কিন্তু এবারের নির্বাচনে দলটি ৫০টি আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অথচ প্রাথমিকভাবে বিজেপিকে তারা জানিয়েছিল নির্বাচনে তারা ছয়টি আসনে প্রার্থী দিতে চায়। সেই ছয়টি নির্বাচনী আসন হলো জারমুন্ডি, নালা, হুসেইনাবাদ, বারকাগাঁও, লাতেহার ও পাঙ্কি।
এলজেপি প্রধান চিরাগ পেশওয়ান টুইট করে জানান, ‘লোক জনশক্তি পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা একাই ৫০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’ তার এমন ঘোষণা উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিজেপি শিবিরের জন্য।
বিজেপিকে আরও বড় সমস্যায় ফেলতে পারে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (এজেএসইউ)। কারণ দলটির সমর্থন আরও বেশি। ২০১৪ সালে ৮টি আসনে প্রার্থী দিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেছিল এজেএসইউ। সেবারের নির্বাচনে এলজেপি বা জনতা দল ইউনাইটেডের থেকে তারা বেশি সফল হয়েছিল।
এজিএসইউ চক্রধরপুরে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। ওই আসন থেকেই নির্বাচনে লড়ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি লক্ষণ গিলুয়া। এই পরিস্থিতিতে বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের ৮১টি আসনের জন্য নতুন করে সমঝোতায় বসতে হবে দুই দলকে। ২০১৪ সালে তারা একসঙ্গে ভোটে লড়েছিল।
এজেএসইউ ১৯টি আসনে প্রার্থী দিতে চাইলেও বিজেপি তাদের নয়টির বেশি আসন দিতে চায় না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। দলটি ইতোমধ্যে তাদের ১২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে চারটিতে বিজেপিও প্রার্থী দিয়েছে। সেই আসনগুলো হলো সিমারিয়া, সিন্দ্রি, মাণ্ডু ও চক্রধরপুর।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি তাদের দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ স্থগিত করেছে। এর আগে গত রোববার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলটি তাদের প্রথম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় ৫২ জনের নাম ছিল। বিজেপি দলীয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জামসেদপুর আসনে।
গত নির্বাচনে রাজ্যের মোট ৮১ আসনের মধ্যে বিজেপি ৭২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। বাকি ৯টির মধ্যে আটটিতে এজেএসইউ এবং অন্যটিতে প্রার্থী ছিল এলজেপির। মোদির প্রথমবার ক্ষমতায় আসার বছরের ওই নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল ৩৭টি আসনে। এজেএসইউ পেয়েছিল পাঁচটি আসন। এলজেপি কোনও আসন পায়নি।
এদিকে ঝাড়খণ্ডের এবারের নির্বাচনে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ৩১টি আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের জোটসঙ্গী ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা ৪৩টি আসনে। এছাড়া অবশিষ্ট ৭টি আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেসের অপর জোটসঙ্গী ও বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল।
এসএ/এমএস