জাতিসংঘে নতুন বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহ অনুমোদন


প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বেশ কিছু নতুন বৈশ্বিক লক্ষ্যসহ টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত এজেন্ডা ২০৩০ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেছে
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। শুক্রবার এ লক্ষসমূহ অনুমোদন করা হয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এ লক্ষ্যসমূহকে উন্নত বিশ্ব গড়ার জন্য একটি সার্বজনীন, সমন্বিত ও গঠনমূলক পরিকল্পনা হিসেবে প্রশংসা করেছেন।
 
বান কি মুন শুক্রবার জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন শীর্ষ সম্মেলন শুরুর ঘোষণা দিয়ে বলেন, নতুন এজেন্ডা হচ্ছে সকল স্থানে সকল মানুষের প্রতি নেতাদের একটি অঙ্গীকার। এটি হচ্ছে মানুষের জন্য, সব ধরণের দারিদ্র্য অবসানের জন্য একটি এজন্ডা- এই গ্রহের জন্য, আমাদের অভিন্ন আবাসস্থলের জন্য একটি এজেন্ডা। শুক্রবার শুরু হওয়া এই সম্মেলন রোববার সমাপ্ত হবে।

ট্রান্সফরমিং আওয়ার ওয়ার্ল্ড : দি ২০৩০ এজেন্ডা ফর সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক এই নতুন কাঠামো কর্মসূচিটি পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের আগে জাতিসংঘ প্রধান অধিবেশনে বক্তৃতা করেন। এই
এজেন্ডায় আগামী ১৫ বছরে দারিদ্র নির্মূল, বৈষম্য দূরীকরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য ১৭টি লক্ষ্য ও ১৬৯টি অভিষ্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের (এমডিজি) সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে নতুন লক্ষ্যসমুহ অর্জনে কাজ করা হবে। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে দারিদ্র্যের অমর্যাদা মোকাবেলায় ১৫ বছর মেয়াদী এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।

‘দি আর্থ ফ্রম স্পেস` চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী, জাতিসংঘের গুডইউল অ্যাম্বাসেডর শাকিরা ও এঞ্জেলিক কিডিও’র পারফরমেন্স, মেয়েদের শিক্ষার প্রবক্তা নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই এর আহ্বান এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য মশালবাহী তরুণ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়।

এজেন্ডা অনুমোদন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী লারস লোক রাসমুসেন এবং উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ই্ওয়েরি কাগুতা মুসেভেনি। তারা এমডিজি’র সাফল্য এবং নতুন এজেন্ডার পূর্ণ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এজেন্ডা অনুমোদনের পর বান কি মুন সাংবাদিকদের বলেন, এসব লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত ভবিষ্যতের পরিকল্পনা। বিশ্বকে বদলানোর জন্য এখন এই লক্ষ্যগুলোকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আমরা অংশীদারিত্ব ও অঙ্গীকারের মাধ্যমে তা করবো। আমরা কাউকে পিছনে ফেলে যাবো না।

বান কি মুন ‘নতুন বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব’ গড়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহ বা এজেন্ডা ৩০ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সম্মেলনে যোগদানকারী বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং অন্যদের প্রতি আহ্বান জানান। এজেন্ডা ২০৩০ আমাদেরকে জাতীয় সীমান্তের ও স্বল্প-মেয়াদী স্বার্থের বাইরে তাকানোর এবং দীর্ঘ মেয়াদে সংহতির ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন এই বিরাট লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। জাতিসংঘ এই নতুন প্রয়াসে সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি আরো বলেন, সকল অংশীদারদের অবশ্যই এতে সম্পৃক্ত করতে হবে যেমনটি আমরা এজেন্ডা নির্ধারণের ক্ষেত্রে করেছি। সকল পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকারকে অবশ্যই সম্পৃক্ত করতে এবং সকল নগরী ও গ্রামীণ এলাকায় কাজ করতে হবে।

বান কি মুন বলেন, ৭০ বছর আগে মহাযুদ্ধের ছাই থেকে জাতিসংঘের উত্থান ঘটেছিল। সরকারগুলো তখন জনগণের জন্য নিবেদিত একটি সুদূরপ্রসারী সনদে একমত হয়েছিল। আজ আপনারা যে এজেন্ডা গ্রহণ করছেন, তা সনদের লক্ষ্যসমূহকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এতে একটি সুস্থ পৃথিবীতে শান্তি, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষাগুলো ব্যক্ত হয়েছে।

সাধারণ পরিষদের সভাপতি মোজেন্স লিকেটফট টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত এজেন্ডা ২০৩০-কে দারিদ্র্য, প্রান্তিকীকরণ ও বৈষম্যের অন্যায্যতা মোকাবেলায় ‘উচ্চাকাঙ্খী’ কর্মসূচি বলে অভিহিত করেছেন।

একে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।